পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য (t. o. উচ্চহাসি এবং মুখভার কোনটাই সত্য অথবা স্থায়ী নয়। যে কোনো মুহুর্তে একটা অন্তৰ্দ্ধান করে আর একটা দেখা দিতে পারে। এর প্রমাণ দেবার জন্যই যেন মালতীর মুখে হঠাৎ হাসি দেখা গেল, “কাণ্ড দেখলে লোকটার ? তোমায় ডেকে এনে স্নান করতে চলে গেল। জ্বালিয়ে মারে। জানলে ? জালিয়ে মারে।--তুমি কিন্তু অনেক বড় হয়ে গেছে!” “আশ্চৰ্য্য নয়। বত্ৰিশ বছর বয়স হয়েছে।” । ‘তাই বটে! আমি কি আজকে বাড়ী ছেড়েছি! কতযুগ হয়ে গেল ! দাড়াও, কতবছর হল যেন ? কুড়ি । ষোল বছর বয়সে বেরিয়ে এসেছিলাম, আমার তবে ছত্ৰিশ বছর বয়স হয়েছে ! আঃ কপাল, বুড়ী হয়ে পড়লাম যে ! কাণ্ড দ্যাখো ।” হেরম্বকে আগাগোড়া সে ভাল করে দেখল । “তোমায় তো বেশ ছেলেমানুষ দেখাচ্ছে ? সাতাশ আটাশের বেশ বয়স মনে হয় না। তুমি একদিন আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলে গো ! তখন হেসে না মরে যদি রাজী হয়ে যেতাম ! আমার তাহলে , আজ দিব্যি একটি কচি সুপুরুষ বর থাকত ” হেরম্ব হেসে বলল, “মাষ্টারমশায় তখন যে রকম সুপুরুষ ছিলেন-” ‘মনে আছে ?” মালতী সাগ্রহে জিজ্ঞাসা করল, “বলত, সেই মানুষকে এখন দেখলে চেনা যায় ? আমার বরং এখনো কিছু কিছু রূপ আছে। দেখে তুমি মুগ্ধ হচ্ছে না ?” “না। ছেলেবেলা মুগ্ধ করে যে কষ্টটাই দিয়েছিলেন—” “তাই বলে এখন মুখের ওপর মুগ্ধ হচ্ছে না বলে প্ৰতিশোধ নেবে ? তুমি তো লোক বড় ভয়ানক দেখতে পাই। বিয়ে করেছ ?”