পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“দিবারাত্রির কাব্য (by “তোর মত বেয়াদব মেয়ে সংসারে নেই আনন্দ ।” মালতীর পরিবর্তন হেরম্ব বুঝতে পারছিল না। সে মোটা হয়েছে, তার কণ্ঠ কৰ্কশ, তার কথায় ব্যবহারে কেমন একটা নিলাজ রুক্ষতার ভাব। আনন্দের মধ্যস্থত না থাকলে মালতীর মধ্যে সত্যবাবুর মেয়ের কোন চিহ্নই খুজে না পেয়ে হেরম্ব হয়ত আজ আরও একটু বুড়ো, আরও একটু বিষাদগ্ৰস্ত হয়ে বাড়ী ফিরত ! কুড়ি বছরের পুরানো গৃহত্যাগের ব্যাপারটার উল্লেখ মালতী নিজে থেকেই করেছিল, দ্বিধা করে নি, লজ্জা পায় নি । এটা সে বুঝতে পারে । বুঝতে পারে ষে দশ বছরের মধ্যে একদিনের লজ্জাতুরা নববধূ যদি সকলের সামনে স্বামীকে বাজারের ফর্দ দিতে পারে, মালতীর বাড়ী ছেড়ে বেরিয়ে আসাটা কুড়িবছর পরে তুচ্ছ হয়ে যাওয়া আশ্চৰ্য্য নয়। কিন্তু তার “পরিচয় পাবার পরে ও কারণ না এনে দেবার জন্য অনাথকে সে তো অনুযোগ পৰ্য্যন্ত করেছিল ! আন্দের সঙ্গে তর্ক করে মঙ্গকে কারণ নাম দিয়ে ধৰ্ম্মের নামে নিজেকে সমর্থন করতে ও তার বাধে নি । মালতী এভাবে বদলে গিয়েছে কেন ? তার ছেলেবেল ব্রি রূপকথার হননাথ আজও তেমনি আছে, মালতীকে এভাবে বদলে দি ল কিসে ? আনন্দ আর একবারও হেরম্বের দিকে তাকায় নি। কিন্তু ক্ষণে ক্ষণে তাকে না দেখে হেরম্বের উপায় ছিল না ! ওর সম্বন্ধে একটা আশঙ্কা তার মনে এসেছে যে, মালতীর পরিবর্তন যদি বেশ দিনের হয় আনন্দের চরিত্রে হয়ত তার ছাপ পড়েছে । “তানন্দের কথা শুনে, হাসি দেখে, মালতীর দেহ দিয়ে নিজেকে তাদ্ধেক তাড়াল করে ওর বসবার ভঙ্গী দেখে মনে হয় বটে যে, সত্যবার মেয়ের মধ্যে যেটুকু অপূর্ব ছিল,