পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ァ> দিবরাত্রির কাব্য iানুষ কি করবে বল ? পঞ্চাশ ষাট বছর তাকে বঁাচতে হবে অথচ জীবনে তার কাজে নেই।” “কাজ নেই ?” “কোথায় কাজ ? কি কাজ আছে মানুষের ? অঙ্ক কষা, ইঞ্জিন iানানো, কবিতা লেখা ? ওসব তো "ভাণ, কাজের ছল! পৃথিবীতে কেউ ওসব চায় না । একদিন মানুষের জ্ঞান ছিল না, বিজ্ঞান ছিল না, সভ্যতা ছিল না, মানুষের কিছু এসে যায় নি। আজি মানুষের ওসব আছে কিন্তু তাতেও কারো কিছু এসে যায় না । কিন্তু মানুষ নিরুপায়। তার মধ্যে ঘ বিপুল শূন্যতা আছে সেটা তাকে ভরতেই হবে। মানুষ তাই জটিল অঙ্ক দয়ে, কায়দাদুরস্ত ভাল ভাল ভাব দিয়ে, ইস্পাতের টুকরা দিয়ে, আরও সব হাজার রকম জঞ্জাল দিয়ে সেই ফাকটা ভারতে চেষ্টা করে। পৃথিবীর দকে তাকিয়ে দ্যাখো জীবন নিয়ে মানুষ কি হৈ-চৈ করছে, কি প্ৰবল প্রতিযোগিতা মানুষের, কি ব্যস্ততা । কাজ ! কাজ ! মানুষ কাজ করছে! বৌকে কঁাদিয়ে বৈজ্ঞানিক খুঁজছে নতুন ফরমুলা, আজও খুজিছে কালও খুজছে। দোকান খুলে বিজ্ঞাপনে বিজ্ঞাপনে চারিদিক ছেয়ে ফলে, উৰ্দ্ধশ্বাসে ব্যবসায়ী করছে টাকা। ঘরের কোণে প্ৰদীপ জেলে সে বিদ্রোহী কবি লিখছে কবিতা, সারাদিন ছবি একে আটষ্ট ওদিকে দি খেয়ে ফেণাচ্ছে জীবন। কেউ অলস নয়। আনন্দ, কুলি, মজুর, |াড়োয়ান, তারাও প্ৰাণপণে কাজ করছে। কিন্তু কেন করছে আনন্দ ? 1াগলের মত মানুষ খালি কাজ করছে কেন ? মানুষের কােজ নেই বলে। আসল কাজ নেই বলে! ছটফট করা ছাড়া আর কিছু করার নই বলে ।” V :