পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ክዖ(ሎ দিবরাত্রির কাব্য জগতে এমন কথা নেই। আমি যা বলতে লজ্জা পাই। নাচার পর আমার ঘুম দেখে মা বলে, তোর আর বিয়ের দরকার নেই আনন্দ।” বলে আনন্দ হঠাৎ উদ্ধত ভাবে হেরম্বকে আক্রমণ করল, বলল, “আপনি নেহাৎ অভদ্র। মেয়েদের সঙ্গে আলাপ করতে জানেন না।” মনে হয় সে বুঝি হঠাৎ উঠে চলে যাবে। হেরম্বের মুখের দিকে তাকিয়ে ক্রুদ্ধ ভঙ্গিতে সে মুখ ঘুরিয়ে নেয় । ঠোঁট দুটি কঁাপিতে থাকে । নিষ্ঠুর আনন্দের সঙ্গে হেরম্ব লজ্জাতুর অপ্রতিভা আনন্দের আত্মসম্বরণের ব্যাকুল প্ৰয়াসকে উৎসাহিত করে বলে, “বলো বলো, থেম না। আনন্দ ।” “না, বলব না । কেন বলব !” হেরম্ব আরও নিৰ্ম্মম হয়ে বলে, “তুমি তাহলে বুড়ী নও আনন্দ ? মিছামিছি তোমার তাহলে রাগ হয় ? এতক্ষণ আমাকে তুমি ঠকাচ্ছিলে ?” “আপনি চলে যান। আপনাকে আমি নাচ দেখাব না।” “দেখিও না । আমি ঢের নাচ দেখোঁচি ।” ‘তাহলে অনর্থক বসে আছেন কেন ? রাত হল, বাড়ী যান না।” “বেশ । তোমার মাকে ডাকে । বলে যাই ।” আনন্দ চুপ করে বসে রইল। হেরম্ব বুঝতে পারে, সে কি ভাবছে। সে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। হেরম্ব নিষ্ঠুরতা করেছে বলে নয়, নিজেকে সে সত্য সত্যই সম্পূর্ণ অকারণে ছেলেমানুষ করে ফেলেছে বলে। এ ব্যাপার আনন্দ বুঝতে পারছে না। নৃত্য করে” সে মেয়েদের বিবাহিত জীবনের আনন্দ ও অবসাদ পায় এই কথাটি সে এত বেশী লজ্জাকর মনে করে না।