পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য b”ኳ” “আজ্ঞে না, আমি কারো দাসী নই।” “তবে মন্দিরে ঠাকুরের সামনে নাচে যে ?” “ঠাকুরের সামনে বলে নয়। মন্দিরে জায়গা অনেক, মেঝেটিাও বেশ মসৃণ। সবদিন মন্দিরে নাচি না'। মাঝে মাঝে । আজ এইখানে নাচব, এই ঘাসের জমিটাতে। ঠাকুর আমাদের সৃষ্টি করেছেন, ভক্তের কাছে যা প্ৰণামী পান। তাই দিয়ে ভরণপোষণ করেন । এটা হল তার কৰ্ত্তব্য । কৰ্ত্তব্য করবার জন্য সামনে নাচব, নাচ আমার অতি সস্তা নয় ।” “বোঝা যাচ্ছে দেবতাকে তুমি ভক্তি কর না।” ‘ভক্তি করা উচিত নয়। বাবা বলেন, বেশী ভক্তি করলে দেবতা চটে যান। দেবতা কি বলেন, শুনবেন ? বলেন, ওরে হতভাগার দল ! আমাকে নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে তোরা একটু আত্মচিন্তা করতে বাপু ! আমাকে নিয়ে পাগল হয়ে থাকবার জন্য তোদের আমি পৃথিবীতে পাঠাই নি। সবাই মিলে তোরা আমাকে এমন লজ্জা দিস।” হেরম্ব খুশী হয়ে বলল, “তুমি তো বেশ বলতে পাের আনন্দ ?” “আমি বলতে পারি ছাই। এসব বাবার কথা ।” ‘‘তোমার বাবা বুঝি খুব আত্মচিন্তা করেন ?” ‘দিনরাত । বাবার আত্মচিন্তার কামাই নেই। আপনার সঙ্গে দেখা হওয়ায় আজ বোধ হয় মন একটু বিচলিত হয়েছিল, এসেই আসনে বসেছেন। কখন উঠবেন তার ঠিক নেই। এক একদিন সারারাত আসনে বসেই কাটিয়ে দেন।” মন্দিরের মধ্যে মালতী শুনতে পাবে বলে আনন্দ হেরম্বের দিকে বুকে পড়ল ।