পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য ଈ୯୬ হেরম্ব জিজ্ঞাসা করল, “সেদিন কি হয়েছিল ?” আনন্দ বলল, “বোলো না মা ।” মালতী বলল, “আমি একটু বকেছিলাম। বলেছিলাম, উপোস করে থাকলে নাচতে পাবি না। আনন্দ। এই শুধু বলেছি, আর কিছুই নয় । যেই বলা-” আনন্দ বলল, “যেই বলা ! কতক্ষণ ধরে বকেছিলে মনে নেই বুঝি ?” মালতী বলল, ‘হঁ্যারে, হ্যাঁ, তোকে আমি সারাদিন ধরে শুধু বাকছি। খেয়ে-দোয়ে আমার আর কাজে নেই। তারপর মেয়ে আমার কি করল জান হেরম্ব ? কান্না আরম্ভ করে দিল। সে কি কান্না হেরম্ব, বাপের জন্মে আমি অমন কান্না দেখি নি। কিছুতেই কি থামে ? লুটিয়ে লুটিয়ে মেয়ে আমার কঁদছে তো কঁদছেই। আমরা শেষে ভয় পেয়ে গেলাম । আমি আদর করি, উনি এসে কত বোঝান, মেয়ের কান্না। তবু থামে না। দু’জনে আমরা হিমসিম খেয়ে গেলাম।” হেরম্ব ফিসফিস করে মালতীকে জিজ্ঞাসা করল, ‘আনন্দ পাগল নয়, তো, মালতী-বৌদি ?” “কি জানি । ওকেই জিজ্ঞেস কর।” আনন্দ কিছুমাত্র লজ্জা পেয়েছে বলে মনে হ’ল না। সপ্ৰতিভ ভাবেই সে বলল, ‘পাগল বৈকি ! আমি অভিনয় করেছিলাম, মজা দেখেছিলাম।” “চোখ দিয়ে জলও তুই অভিনয় করেই ফেলেছিলি, না রে আনন্দ ?” “চোখ দিয়ে জল ফেলা কিছু শক্ত নাকি ! বল না, এখুনি মেঝেতে পুকুর করে দিচ্ছি! বসুন ওই চৌকিটাতে ।”