পাতা:দিল্লীশ্বরী.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিল্লীশ্বরী : সম্রাট জহাঙ্গীরের প্রিয়তম মহিষী, সম্রাটের বিয়োগবিধুরী বিধবা-পত্নী ! এক এক করিয়া সুদীর্ঘ অষ্টাদশ বৎসর কালসাগরে লীন হুইল । কত জনের উখন পতন হইল। ভহাঙ্গীর বাদশাহ র মহিষী এই সুদীর্ঘ কাল লাহোরের এক নিভৃত নিকেতনে পলে পলে মৃত্যুমুখে অগ্রসর হইতেছিলেন। এই কয় বৎসর তাহার কি ভাবে অতিবাহিত হইয়াছিল, খাফি খাঁ তাহ বলিয়াছেন। নূরুজহানের শেষজীবনের কথা মনে হইলে হৃদয় বেদনায় ভরিয়া উঠে । মনে হয়, এই কি সেই নুরজহান্‌—যিনি সম্মান, ক্ষমতা ও প্রভুত্বলাভের জন্ত অন্যায় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হইয়াছিলেন,–এই কি সেই নূরজহান্‌, যিনি ন্যায়ূধৰ্ম্মের মস্তকে পদাঘাত করিয়া স্বার্থসিদ্ধির জন্ত কত কাণ্ড করিয়াছিলেন । মধ্যজীবনে সম্রাঞ্জী নুরজহান্‌ যাহা করিয়াছিলেন, শেষজীবনে পতিবিয়োগবিধুরা নূরজস্থান লাহোরের নির্জল আবাসে অহোরাত্র অশ্রুপাত করিয়া, সকল মুখে, সক, ভোগে ভূলাঞ্জলি দিয়া, ব্রহ্মচারিণীর স্থায় জীবন যাপন করিষ্ঠ। সে অপরাধের, সে পাপের কালিম মুছিয়া ফেলিবার জন্য যথাসাধ্য চেষ্ট করিয়াছেন। কঠোর চরিত্র-নীতিক তাহাকে মার্জনা না করিতে পারেন, তাহার অপক্ষপাত লেখনী সম্রাজ্ঞীর বিরুদ্ধে অনেক কথা লিতে পারে, কিন্তু দিল্লীশ্বরীর শেষজীবনের কথা স্মরণ করিয়া কি কেহ তাহার স্মৃতির উদ্দেশে একটি দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিবেন না ? মোগল-সাম্রাজ্যের অধীশ্বরী—সম্রাটু জহাঙ্গীরের প্রিয়তমা মহিষীর পক্ষে কি একটি দীর্ঘনিশ্বাসও ফুলত হইবে ?