পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দিতে থাকবে, আর জাপান অন্তর্বৃত্তের উপর তার কর্ত্তৃত্ব বজায় রেখেই চলবে। মার্কিণ মনোবল ভাঙতে সুরু না করা পর্য্যন্ত এমনি ধারাই চলতে থাকবে। এ যুদ্ধ শুধু অস্ত্রের নয়— স্নায়ুরও বটে। পৃথিবীতে এবিষয়ে কারও বোধ হয় মতদ্বৈধ থাকতে পারে না যে, জাপানের মনোবল যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক বেশী; আগামী দিনের দুঃখ-কষ্ট জাপানী স্নায়ু যতটা ভালভাবে সইতে পারবে, আমেরিকান স্নায়ু ততটা কখনও পারবে না।

 আমার সমালোচকরা হয়তো এইখানে চুংকিং-চীনের প্রশ্ন তুলে জানতে চাইবেন, পূর্ব্ব-এশিয়ায় মিত্রশক্তির বিজয় কল্পে চুংকিং কি সাহায্য করতে পারে? চুংকিং-এর বাহিনী দীর্ঘকাল ধরে নিপ্পন বাহিনীকে যে বাধা দিচ্ছে তার সামরিক মূল্য কেউ অস্বীকার করবে না, এবং নিপ্পনের জনগণ ও সেনাবাহিনী এত বাস্তববাদী যে তারাও এ সত্যকে অবহেলা করে না। কিন্তু চীনে জাপানের নতুন নীতি এবং চীনের জাতীয় গবর্নমেণ্টের সঙ্গে জাপানের সর্ব্বশেষ চুক্তি সম্পাদনের ফলে চুংকিংএর নৈতিক ভিত্তি অনেকটা ধ্বসে গেছে। এই চুক্তির ফলে বিরোধের অবসান হলে জাপান চীন থেকে তার সৈন্য সরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। এই চুক্তির দ্বারা চীনের জনগণ কার্য্যতঃ তাদের সবগুলো দাবীই পূরণ করে নিতে পেরেছে। চুংকিং তবে এখন কিসের জন্যে যুদ্ধ করছে? পূর্ব্ব-এশিয়ায় প্রত্যেকের মনেই আজ এই প্রশ্ন। চীনে জাপানের নতুন নীতির ফল হয়েছে এই যে চীনের জনগণের মধ্যে অনেকেই আজ ভাবতে সুরু করছে, যে জাপানের সঙ্গে যখন সম্মানজনক শাস্তিস্থাপন সম্ভব, তখন বিরোধের অবসান হওয়াই উচিত, এবং জাতীয় পুনঃ-সংস্থাপন ও পুনর্গঠনের কাজ আরম্ভ হওয়া উচিত। চীনের জাতীয় গবর্নমেণ্ট জাতীয় পুনর্গঠনের কাজে যতই এগিয়ে যাচ্ছে, ততই সমগ্র চীনে শান্তির আকাঙ্ক্ষা ছড়িয়ে পড়ছে। কাজেই চুংকিং আজ নৈতিক হিসাবে দুর্ব্বল

৮৮