পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার চেয়ে বেশী সুখী কেউ হবে না। সেক্ষেত্রে পূর্ব্ব-এশিয়ায় বর্ত্তমানে আমরা যে সুবৃহৎ প্রচেষ্টায় আত্মনিয়োগ করেছি, তার আর কোন প্রয়োজনই থাকবে না।

 এই প্রসঙ্গে আমি বলতে চাই, প্রকৃত স্বাধীনতা কামনা করে যাঁরা এত দিন পর্য্যন্ত অহিংস উপায়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে আসছেন, সর্ব্বপ্রকার উপায় ব্যর্থ হওয়ায় তাঁদের এই বর্ত্তমান সশস্ত্র সংগ্রামই সমর্থন করা উচিত। আমি জানি, আমাদের যুবক-সমাজের এ বিষয়ে সমর্থন আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু আমাদের প্রবীণ নেতারা কি বলেন? তাঁদেরও এই পথ অবলম্বন করা উচিত। আমাদের প্রধান কংগ্রেস-নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ নেহাৎ হতাশ হয়ে ইতিপূর্ব্বে পরিত্যক্ত মধ্যপন্থী ও উদারনৈতিকদের নীতিতে ও পথে ফিরে যাবার প্রবণতা দেখাচ্ছেন। এটা পরম পরিতাপের বিষয়।

 এইবার আমি আমাদের আন্দোলনের কৌশল অতি সংক্ষেপে পুনরুল্লেখ করব। ভারতের বৃটিশ-বাহিনী বাইরে থেকে আক্রান্ত না হওয়া পর্য্যন্ত, তারা দেশের বিপ্লবী আন্দোলনকে দমন করতে সক্ষম হবে। অজাদ-হিন্দ ফৌজ সেই হিসাবে ভারতের মুক্তিসংগ্রামে “দ্বিতীয় রণাঙ্গন” সৃষ্টি করেছে। আমরা যখন ভারতের মধ্যে আরও এগিয়ে যাব এবং ভারতের জনগণ নিজেদের চোখে বৃটিশদের পশ্চাদপসরণ করতে দেখবে, তখন তাদের মনে বিশ্বাস জন্মাবে যে, বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের পতন সন্নিকটবর্ত্তী। শুধু তখনই তারা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে এগিয়ে আসবে এবং স্বদেশের মুক্তির জন্যে আমাদের অগ্রসরমান সেনাদলের সঙ্গে হাত মেলাবে। একসঙ্গে আমরা তখন বৃটিশদের পশ্চাদ্ধাবন করব এবং তাদের ভারতের মাটি থেকে বিতাড়িত করব।

 রাজনৈতিক কিংবা সামরিক—যে কোন কৌশল অনুসারেই কাজ করতে গেলে জনগণের মনস্তত্ত্ব সর্ব্বদাই বুঝতে হয়। যে-কোন সংগ্রামের

৯৯