পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ১৮৫৭ অব্দের ঘটনাবলী যখন আমি পড়ি এবং বিপ্লবের ব্যর্থতার পর বৃটিশরা যে ব্যবহার করেছিল তার কথা যখন আমি ভাবি, তখন আমার রক্তে যেন আগুন ধরে যায়। শুধু যুদ্ধকালেই নয়, তার পরেও নির্দ্দোষ স্বাধীনতাকামী ভারতীয়দের রক্তপাত হয়েছে; অমানুষিক ভাবে তারা নির্য্যাতিত হয়েছে। তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। দেশবাসীরা অতিমানব-সুলভ সাহস এবং বীরত্বের পরিচয় দেবে এটা যদি আপনাদের কাম্য হয়, তবে তাদের শুধু দেশকে ভালবাসতে শিখলেই চলবে না, বিপক্ষীয়দের নিষ্ঠুরতাও স্মরণ রাখতে হবে।

 আমাদের ভবিষ্যৎ কর্ম্মপন্থা হচ্ছে রক্তদান। এই যুদ্ধে আমাদের বীরদের রক্তদান আমাদের অতীত পাপকে ধুয়ে মুছে দেবে। আমাদের স্বাধীনতার মূল্য হবে বীরদের রক্তপাত। ভারতের জনগণ অত্যাচারীদের উপর যে প্রতিশোধ নিতে চায়, আমাদের বীরদের রক্ত—তাদের বীরত্ব এবং তাদের সাহস—সেই প্রতিশোধ-গ্রহণের ব্যবস্থা করবে।

 পরাজয়ের পরে বৃদ্ধ বাহাদুর শাহ এই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন:

“গাজীয়োঁ মেঁ বু রহেগি, যব তলক ইমানকি
থক্‌ত লণ্ডন তক্‌ চলেগি, থেগ হিন্দুস্থান কি।”

 “যতদিন পর্য্যন্ত আমাদের স্বাধীনতার সৈনিকদের হৃদয়ে বিশ্বাস থাকবে, ততদিন পর্য্যন্ত ভারতের খড়্গ লণ্ডনের হৃদয় বিদ্ধ করবে।” তিনি ঠিকই বলেছিলেন। ভারতের মুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের অবসান হয়ে যাবে।

 সম্রাট বাহাদুর শাহের স্মৃতিস্তম্ভের নিচে আনুষ্ঠানিক কুচ-কাওয়াজ উপলক্ষে: ১১ জুলাই, ১৯৪৪

১১১