পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

শক্তি এমন অটল ভিত্তির উপর স্থাপন করবে যেন আর কোনদিন, আমরা স্বাধীনতা না হারাই। সৈনিক হিসাবে তোমাদের তিনটি আদর্শ হৃদয়ে পোষণ করতে হবে এবং তদনুযায়ী নিজেদের জীবন পরিচালিত করতে হবে। বিশ্বস্ততা, কর্ত্তব্যপালন এবং আত্মত্যাগ— এই তিনটি হবে তোমাদের আদর্শ। যে সব সৈনিক জাতির প্রতি বিশ্বস্ত থাকে, যারা কোন অবস্থাতেই কর্ত্তব্য-পালনে বিমুখ হয় না; যারা আত্মত্যাগের জন্যে সর্ব্বদা প্রস্তুত, তারা হয় অজেয়। তোমরাও যদি অজেয় হতে চাও, তবে অন্তরের অন্তস্থলে এই আদর্শ তিনটি গভীর ভাবে এঁকে রাখ। যে প্রকৃত যোদ্ধা, তার সামরিক ও আধ্যাত্মিক—উভয় প্রকার শিক্ষাই প্রয়োজন। তোমরা প্রত্যেকে নিজেদের এবং সতীর্থদের এমন ভাবে শিক্ষিত করে তোল যে প্রত্যেক সৈনিকের মনে যেন অফুরন্ত আত্মবিশ্বাস থাকে। বিরুদ্ধপক্ষের চেয়ে তারা অনেক শক্তিশালী, এ বিশ্বাস যেন নিজেদের মনে মনে থাকে। মৃত্যু সম্বন্ধে মনে যেন ভয় না থাকে এবং সঙ্কটকালে প্রয়োজনমতো নিজের উদ্দেশ্য-সিদ্ধি করার মতো কর্ম্মক্ষমতা যেন থাকে। আধুনিক যুদ্ধে সাহস, নির্ভীকতা এবং উদ্যমের সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পরিচালিত সেনাদল কি অঘটন ঘটাতে পারে—তোমরা তা স্বচক্ষে দেখেছ। এসব দৃষ্টান্ত থেকে যা শিখতে পার শিখে নেবে এবং আমাদের মাতৃভূমির জন্যে সম্পূর্ণরূপে প্রথম শ্রেণীর সেনাবাহিনী গড়ে তুলবে। যারা সেনানী, তাদের আমি বলব, তাদের কর্ত্তব্য অতি গুরুতর। জগতের সর্ব্বত্র প্রত্যেকটি বাহিনীর সেনানীদের দায়িত্বই গুরুতর; আর এদের বেলা সে দায়িত্ব আরও বেশী। রাজনৈতিক দিক দিয়ে আমরা পরাধীন; তাই অনুপ্রেরণা পাবার মতো আমাদের ইতিহাসে সুকদেন, পোট আর্থার অথবা সিভানের মতো কিছু নেই। বৃটিশ আমাদের যা শিক্ষা দিয়েছে, তার অনেক কিছুই আমাদের ভুলে যেতে হবে এবং যে শিক্ষা দেয় নি, এমন অনেক কিছু