পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার মতানুবর্তী করবার জন্যে আমি এসব কথা বলছি না। তারা জেনে শুনেই মিথ্যা বলছে, তা আমরা জানি। সাধারণের সম্পর্কিত ব্যাপারে মিথ্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না জানানো কুনীতি। পৃথিবীতে সত্যই শেষ পর্য্যন্ত বিজয়ী হয়, তবু সত্য যাতে সত্বর বিজয়ী হতে পারে আমরা সেই জন্যেই যুদ্ধ করি। এই আধুনিক যুগে, শুধু সামরিক ক্ষেত্রে নয়, প্রচার-ক্ষেত্রেও এই যুদ্ধ চালাতে হয়। সাধারণ জনগণের বিষয়ে আমি বলতে পারি যে, শত্রুর অপপ্রচার তাদের উপর কণামাত্র প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। এই জন্যে কলকাতা বেতারে বারবার জনসাধারণের উদ্দেশ্যে সতর্কবাণী উচ্চারণ করতে হয়, তারা যেন ভারতে প্রেরিত আমাদের সহযোগী ও চরদের প্রচারে প্রভাবিত না হয়। ভারতের মধ্য থেকে আমরা এই মর্ম্মে রিপোর্ট পেয়েছি, আমাদের কার্য্যকলাপে বৃটিশ গবর্নমেণ্ট শঙ্কিত হয়ে উঠেছে এবং দেশের মধ্যে আমাদের সহযোগী ও চরদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার জন্যে তারা কয়েকটি ভয়ঙ্কর রকমের অর্ডিনান্স জারী করতে বাধ্য হয়েছে। ইন্দো-ব্রহ্ম সীমান্ত এবং ভারতের মধ্যে গত কয়েক মাসে যে সব দলিল-দস্তাবেজ আমাদের হাতে এসেছে, তার মধ্যেও এই অভিমতেরই সমর্থন মেলে।

 ভারতীয় জনগণের সামনে যে প্রধান প্রশ্ন, এবার আমি তারই আলোচনা করব। আমার সহ-যোদ্ধাদের সঙ্গে মিলে আমি ভারতের স্বাধীনতা-অর্জ্জনের জন্যে একটি পরিকল্পনা— বাস্তব পরিকল্পনা রচনা করেছি; খারাপ হোক আর ভালই হোক, যতক্ষণ পর্য্যন্ত নতুন কোন— পরিকল্পনা না পাওয়া যায়, ততক্ষণ আমাদের এই পরিকল্পনাই মেনে নিতে হবে। একমাত্র অপর পরিকল্পনা হচ্ছে, মহাত্মা গান্ধীর “ভারত ছাড়ো” প্রস্তাব। সে পরিকল্পনা যদি সাফল্যমণ্ডিত হয়, তবে আমাদের পরিকল্পনা এবং আমাদের কার্য্যাবলীর আর কোন মূল্য থাকবে না। অপর পক্ষে মহাত্মা গান্ধীর পরিকল্পনা যদি ব্যর্থ হয়ে যায়—তবে ভারতের

১১৮