পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমাদের হয়ে ভারতে কাজ করতে যায়নি—গেছে জাপানীদের হয়ে। যাদের আমরা কাজ করার জন্যে স্বদেশে পাঠিয়েছিলাম, তাদের কয়েকজন ধরা পড়ে যাওয়া অবশ্য দুর্ভাগ্যের বিষয়। কিন্তু বিরাট সংগ্রামে এ জাতীয় ঘটনা ঘটতে বাধ্য। বৃটিশের কর্ম্মরত আমাদের সেই বন্ধুদের ধন্যবাদ,— যাঁরা তাঁদের প্রভুদের প্ররোচিত করে এই ঘটনাটি বেতার মারফত প্রচার করতে পেরেছেন। ভারতীয় জনগণ দিল্লীর বেতার-ঘােষণা থেকে বুঝতে পেরেছে, আমরা যখন সুদূর বেলুচিস্থানে লােক পাঠাতে পারি, তখন ভারতের এমন কোন অঞ্চল নেই যা আমাদের নাগালের বাইরে। যে চারটি লোক ভারত-বিরােধী রেডিও থেকে বক্তৃতা করেছিল, তারা সবাই প্রায় একই ধরণের জাপবিরোধী কথাবার্ত্তা তােতাপাধীর মতাে আবৃত্তি করেছিল। এটা সত্যি খুব কৌতুকজনক। আর এটাও কৌতুকজনক যে, এই সব বেতার-বক্তৃতার পর, শত্রু-প্রচারকরা আবার এ বিষয়ে অদ্ভুত নীরবতা অবলম্বন করেছে। জার্ম্মানী থেকে ১৯৪১ অব্দে রুডলফ হেস ইংল্যাণ্ডে যাবার পরও ঠিক এমনই ব্যাপার ঘটেছিল; বি. বি. সি. সােৎসাহে এই কথা ঘােষণা করার পর হঠাৎ আবিস্কার করেছিল যে “কথা যদিও রৌপ্যবৎ, নীরবতা স্বর্ণবৎ” (Though speech was silver, silence was golden) সম্প্রতি বৃটিশ প্রচারকরা আজাদ হিন্দ ফৌজ থেকে করেকটির দলত্যাগের সম্বন্ধে নতুন গল্প প্রচার করতে বাধ্য হয়েছে। প্রচারকার্য্যে অত্যধিক ত্বরা খারাপ নীতির পরিচায়ক। তাই আমি আবার ভারত বিরোধী রেডিওকে সেই বহু-উদ্ধৃত প্রবাদবাক্য স্মরণ করিয়ে দিতে চাই: “যে শেষে হাসে তার হাসিই সব চেয়ে ভাল” (He laughs best who laughs last)।

 ভারত-বিরােধী রেডিও সম্প্রতি ব্রিটিশ জেনারেল মণ্টগােমারির বড় বড় কৃতিত্বের কথা বলছে। তবু ভাল যে তারা ফিল্ড-মার্শাল লর্ড

১২১