পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

স্থানে বিপ্লবী বাহিনীকে অনুরূপ অবস্থার মধ্যেই লড়াই করতে হয়। প্রত্যেক স্থানে তারাই শেষ পর্য্যন্ত জিতেছে। আমরাও জিতব। কিন্তু স্বাধীনতার জন্যে আমাদের রক্ত-মূল্য দিতে হবে।

 বৃটিশ প্রচারকরা ভারতীয় জনগণকে বলছে, আজাদ-হিন্দ ফৌজ মণিপুরে এলেও তারা কখনও দিল্লী পৌঁছতে পারবে না। আমরা এমন কোন তারিখ নির্দ্দেশ করি নি, যে-তারিখের মধ্যে দিল্লী পৌঁছাবোই। সুস্থমস্তিষ্ক কোন লোকই তা করে না। ভারত-বিরোধী রেডিওই আমাদের দিল্লী-প্রবেশের কাল্পনিক তারিখ আবিষ্কার করছে, এবং আমরা সেই সময়-তালিকা অনুসারে কাজ করতে পারি নি বলে আমাদের সমালোচনা করছে। পৃথিবীর বহু শক্তির দ্বারা সমর্থিত বৃটিশ সাম্রাজ্যের মতো শক্তিশালী সাম্রাজ্য প্রায় পাঁচবৎসর ধরে যুদ্ধ করে চলেছে। কিন্তু তারা লাভ করেছে কি? আমরা আমাদের সামান্য সামর্থ্য নিয়ে যদি ভারতীয় অভিযানের সময় দুই বৎসর নির্দ্ধারণ করি, তবে সেটা কি খুব বেশী হবে? ভারত-বিরোধী রেডিও ১৯৪৬-এর ৪ঠা ফেব্রুয়ারী পর্য্যন্ত অপেক্ষা করুক। তখন যেন তারা আমাদের সময়-তালিকায় ভুল হয়েছে বলে আমাদের সমালোচনা করতে সুরু করে।

 বিপক্ষ-প্রচারকার্য্যের প্রধান উদ্দেশ্য দ্বিমুখী বলে মনে হয়। প্রথমত, বৃটিশরা যুদ্ধ-জয় সম্বন্ধে নিশ্চিত—এরূপ ধারণা-সৃষ্টির প্রয়াস; দ্বিতীয়তঃ আমাদের দেশে জাপবিরোধী মনোভাব সৃষ্টির চেষ্টা। প্রথম উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্যে তারা প্রতিনিয়ত যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠনের কথা বলছে, যেন জয়লাভ তাদের করতলের মধ্যে এসে গেছে। তারা অন্যত্র মিত্রপক্ষের প্রত্যেকটি সাফল্যকে অতিরঞ্জিত করছে। কিন্তু আমরা যখন তথাকথিত এই সাফল্যগুলি বিশ্লেষণ করি, তখন কি দেখতে পাই? ধরুন, ইটালীতে মিত্রশক্তি কি করছে? তাদের ইটালীতে আরও সৈন্য, আরও সমরসম্ভার, আরও এরোপ্লেন এবং আরও যুদ্ধ-জাহাজ পাঠাতে

১২৩