পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

না—তবে বোধ হয় অত্যুক্তি হবে না। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি, ভারতের ভিতরে থেকে আমরা যত রকমের চেষ্টাই করি না কেন, সেই চেষ্টা ব্রিটিশকে ভারত থেকে তাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট হবে না। যদি ভারতে থেকে চেষ্টা করাই আমাদের দেশের লোকের স্বাধীনতা লাভের পক্ষে যথেষ্ট হত, তবে আমি অনাবশ্যক বিপদের ঝুঁকি নেবার নির্ব্বুদ্ধিতা দেখাতাম না। সুতরাং সংক্ষেপে বলতে গেলে, ভারতে যে সংগ্রাম চলছে, বাহির থেকে তার শক্তি বৃদ্ধি করাই আমার দেশত্যাগের উদ্দেশ্য ছিল। বাইরের সমর্থন ছাড়া ভারতের স্বাধীনতা লাভ সম্ভব নয়। ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামের সাফল্যপূর্ণ অবসানের জন্যে বাইরের এই অত্যাবশ্যক সাহায্যের পরিমাণ খুব সামান্য হলেই চলে। এর কারণ এই যে, অক্ষশক্তিবর্গ ব্রিটিশের উপর বারম্বার পরাজয়ের আঘাত করেছে; তার ফলে ব্রিটিশের শক্তি ও মর্য্যাদা এমন ভাবে ভেঙে পড়েছে যে, আমাদের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে খুবই হালকা।

 দেশবাসীর নিকট থেকে যে সাহায্য আবশ্যক ছিল এবং এখনও আছে তা দুই রকমের—নৈতিক এবং সামরিক। প্রথমতঃ, তাদের মনে এই দৃঢ় বিশ্বাস জন্মাতে হবে যে, পরিণামে তাদের বিজয় সুনিশ্চিত। দ্বিতীয়তঃ, বাইরে থেকে তাদের সামরিক সাহায্য দিতে হবে। প্রথম উদ্দেশ্য সিদ্ধ করতে হলে যুদ্ধের আন্তর্জাতিক অবস্থা পর্য্যালোচনা করে যুদ্ধের ফল কি দাঁড়াবে তা নির্ণয় করা আবশ্যক। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য ভারতে কিংবা ভারতের বাইরে যে সব ভরতবাসী আছে তারা তাদের স্বদেশস্থ ভারতবাসীদের কি সাহা্য দিতে পারে, তার সন্ধান করা দরকার। সেই সঙ্গে দেখতে হবে, যদি প্রয়োজন হয়—তবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সমর্থকদের নিকট থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে কিনা।

 বন্ধুগণ, আমি এখন আপনাদের একথা বলতে পারি যে, এই উভয়