পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 আমি জানি, এমন সংশয়বাদী আছেন—যিনি বলতে পারেন, ভারতের মধ্যে থেকে আটত্রিশ কোটি ভারতবাসী যদি ভারত থেকে বৃটিশ-শক্তির উচ্ছেদ ঘটাতে না পারে, তবে বাইরে থেকে তিরিশ লক্ষ মাত্র ভারতবাসীর দ্বারা সে কাজ সম্ভব হতে পারে—এমন আশা করা চলে কি? কিন্তু বন্ধুগণ, আয়ার্ল্যাণ্ডের ইতিহাস দেখুন। যদি তিরিশ লক্ষ আইরিশ বৃটিশের অধীনে সামরিক আইনের বাঁধনের মধ্যে থেকেও মাত্র বাহান্ন হাজার সশস্ত্র সিনফিন স্বেচ্ছাসেবকের সাহায্যে গত ১৯২১ অব্দে বৃটিশ গবর্নমেণ্টকে নতজানু করে ফেলতে সমর্থ হয়ে থাকে, তবে ভারতের অভ্যন্তরে পরিচালিত জাতীয় আন্দোলনের সাহায্য লাভ করে তিরিশ লক্ষ ভারতবাসীর পক্ষে বৃটিশকে ভারত থেকে বিতাড়িত করার প্রচেষ্টা দুরাশা হবে কেন?

 একথা আমি জোরের সঙ্গেই বলতে পারি, ভারতের বাইরে যেসব ভারতবাসী আছেন—বিশেষ করে পূর্ব্ব-এশিয়ায়, তাঁরা তাঁদের সর্ব্বশক্তি নিয়োগ করবেন। সেই প্রচেষ্টা সুব্যবস্থিতভাবে পরিচালনার জন্যে স্বাধীন ভারতের একটি সাময়িক গবর্ণমেণ্ট স্থাপনের ইচ্ছা আমার আছে। ভারতবাসীদের সকল শক্তি পুনর্গঠিত করে ভারতস্থ বৃটিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিচালনা—এই গবর্নমেণ্টের কাজ হবে। এই প্রচেষ্টা যখন সার্থক হবে এবং ভারতবর্ষ স্বাধীন হবে, এই সাময়িক গবর্নমেণ্ট তখন স্বাধীন ভারতের স্থায়ী গবর্নমেণ্টের হাতে নিজেদের কার্য্যভার ছেড়ে দেবে। ভারতবাসীদের অভিপ্রায় অনুসারেই এই স্থায়ী গবর্নমেণ্ট স্থাপিত হবে। বন্ধুগণ, এখন আপনারা বেশ বুঝতে পারছেন যে পূর্ব্ব এশিয়ার তিরিশ লক্ষ ভারতবাসীর পক্ষে তাদের সর্ব্ববিধ শক্তি, ধনবল এবং জনবল সুগঠিত করার সময় এসেছে। মনমরা ভাব নিয়ে কাজ করলে চলবে না। আমি সর্ব্বাঙ্গীণ শক্তি-সংগ্রহ চাই—সব দিতে হবে, একটুও কম নয়। আমরা

১২