পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আন্দোলন পরিচালিত করছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা লীগ। আজাদ-হিন্দ ফৌজ ছিল তাঁদের সমর-যন্ত্র। ১৯৪৩-এর ২১শে অক্টোবর থেকে আজাদ-হিন্দ সামরিক গবর্নমেণ্ট স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছে—কাজেই সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় স্বাধীনতা লীগ এবং আজাদ-হিন্দ কৌজের নেতৃত্বও তারই উপর এসে পড়েছে। সেদিন পর্য্যন্ত সামরিক আজাদ-হিন্দ গবনমেণ্টের কার্য্য সীমাবদ্ধ ছিল পূর্ব্ব-এশিয়ার মধ্যে। এখন অবস্থা পরিবর্ত্তনের সঙ্গে সঙ্গে সামরিক গবর্নমেটকে পুনর্গঠিত করতে হবে এবং তার ভবিষ্যৎ কার্য্যক্রমও বাড়াতে হবে। অন্য কথায় বলতে গেলে সামরিক গবর্নমেণ্টকে তিনটি কার্য্যক্ষেত্রের দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে— পূর্ব্ব-এশিয়া, মুক্তিপ্রাপ্ত অঞ্চল এবং ইংরেজ অধিকৃত ভারতবর্ষ। সেইজন্য সামরিক গবর্নমেণ্টের মন্ত্রী এবং উপদেষ্টাদের জন্যে এই তিনটি ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্ব নির্দ্ধারণ করে দিতে হবে। এক দলের কার্য্যক্ষেত্র হবে পূর্ব্ব-এশিয়া, অপর দলের মুক্তিপ্রাপ্ত অঞ্চল, এবং তৃতীয় দলের ইংরেজ-অধিকৃত ভারতবর্ষ। পূর্ব্ব-এশিয়ায় কর্ম্মরত প্রথম দলকে বলা হবে মন্ত্রীমণ্ডলের পূর্ব্ব-এশিয়া কমিটি, মুক্তিপ্রাপ্ত অঞ্চলে কর্ম্মরত দ্বিতীয় দলকে বলা হবে মুক্তিপ্রাপ্ত অঞ্চল কমিটি, আর তৃতীয় দলের নামকরণ হবে যুদ্ধ কমিটি।

 ভবিষ্যতে পূর্ব্ব-এশিয়ায় লােক, অর্থ এবং দ্রব্যাদি সংগ্রহের ব্যাপারে আরও বেশী উৎসাহ ও শক্তি নিয়ােগ করতে হবে। এই উদ্দেশ্যে বিশেষ মন্ত্রী-বিভাগ সৃষ্টি করতে হবে অথবা বর্ত্তমান বিভাগের সম্প্রসারণ করতে হবে—যাতে এই সব সমস্যার সহজ সমাধান হয়। বর্ত্তমান অর্থসচিবের বিভাগকে সম্প্রসারিত করতে হবে এবং তাঁর কার্য্যক্ষেত্রের সীমান্ত বাড়াতে হবে। বিভিন্ন কাজের জন্য আরও বহু নরনারী সংগ্রহ এবং তাদের শিক্ষাবিধানের জন্যে জনশক্তির মন্ত্রিবিভাগ নামে একটি নতুন বিভাগের সৃষ্টি করতে হবে। আজাদ হিন্দ ফৌজ, ঝাঁসীর রাণী বাহিনী, আজাদ-হিন্দ দল এবং ভারতীয় স্বাধীনতা লীগের দৈনন্দিন কাজের জন্যে

৩৬