পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মহাত্মা গান্ধীকে পুনরায় গ্রেপ্তার করার জন্যে তারা ভারত এবং অন্যান্য মিত্ররাষ্ট্রের জনসাধারণকে প্রস্তুত রাখতে চায়। ১৯৪২এর আগষ্ট মাসে গান্ধীকে কারাগারে প্রেরণের পর ওরা কতকগুলো দলিলপত্র প্রকাশ করে জনসাধারণকে বোঝাতে চেয়েছিল, গান্ধীজীর মনোভাবে আপোষ এবং মিলনের স্থান নেই। এই পত্রালাপ প্রকাশিত করেও তারা জনগণকে বোঝাতে চায়, তাঁকে গ্রেপ্তার করা ছাড়া বৃটিশ গবনমেণ্টের গত্যন্তর ছিল না; কাজেই প্রকাশিত ঘটনাবলীর ভিত্তিতে আমি বিবেচনা করি মহাত্মা গান্ধী কিংবা অন্য কোন কংগ্রেস নেতা বিনাসর্ত্তে বৃটিশ গবর্নমেণ্টের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন—এরূপ কোন সম্ভাবনা নেই। ভারতের আভ্যন্তরীণ অবস্থা আমাদের পক্ষে পরম অনুকূল—এই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। কংগ্রেস যতদিন আপোষ না করছেন এবং বিনাসর্ত্তে বৃটিশ গবর্নমেণ্টের কাছে আত্মসমর্পণ না করছেন ততদিন জনসাধারণের মনোভাব থাকবে বৃটিশ-বিরোধী। আমাদের অভিযান যত অগ্রসর হবে, জনগণও ততই বুঝতে পারবে, স্বাধীনতা লাভের এই হচ্ছে উপায়। তারা হয় যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করবে, নয়ত আমাদের যুদ্ধ-পরিচালনায় সাহায্য করবে।

 পূর্ব্ব-এশিয়া ও অন্যান্য রণক্ষেত্রে আমাদের কৃতিত্ব, অনুকূল বিশ্বপরিস্থিতি ও ভারতের আভ্যন্তরীণ অবস্থা—এই সব মিলে আমাদের মনে ভবিষ্যৎ স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্বন্ধে প্রচুর আশা এবং আশাবাদের সঞ্চার করছে।

৪৪