পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ইউরোপের অবস্থা

 ভারত এবং আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামের সঙ্গে ইউরোপীয় পরিস্থিতির যে সম্পর্ক আছে সেই সম্বন্ধে কিছু বলছি। আমি যা বলব তা অন্য কারও মত নয়—আমার ব্যক্তিগত মত। আমার বিশ্বাস এবং আশা আছে, আমি যে বর্ণনা দেব তাতে অন্ততঃ বাস্তব পরিস্থিতি অনুধাবনে আপনাদের কিছু সাহায্য হবে। রাজনৈতিক হোক, আর সামরিক হোক, কোন বিশেষ পরিস্থিতির পরিমাপে সর্ব্বদাই নিজের অজ্ঞাতসারে ইচ্ছানুরূপ চিন্তার আশঙ্কা থাকে। যে বিচার এইভাবে ব্যক্তিগত পছন্দ কিংবা কুসংস্কার কিংবা ইচ্ছানুরূপ চিন্তার দ্বারা দূষিত হয়, তা প্রায়ই বিশ্বাসের অযোগ্য। বর্ত্তমান ক্ষেত্রে ইউরোপীয় পরিস্থিতির পরিমাপে আমি নিজের ইচ্ছানুরূপ চিন্তার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা করবার যথাসাধ্য প্রয়াস পেয়েছি। বিচারে একপেশে হবার মতো কোন উদ্দেশ্য আমার নেই—কেন না আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে, ভারতীয় পরিস্থিতি ইউরোপীয় পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল নয় এবং ইউরোপে যাই ঘটুক না কেন, ভারতীয় জনগণ নিজেদের স্বাধীনতা অর্জ্জন করবেই।

 এই বিশ্লেষণের যথোপযুক্ত পটভূমি সৃষ্টির জন্যে, গত বিশ্বযুদ্ধে (প্রথম মহাযুদ্ধ) কি ভাবে এবং কেন মিত্রশক্তি জয়লাভ করেছিল ও জার্ম্মানী হেরেছিল, আমি প্রথমে সেই প্রশ্নেরই আলোচনা করব। বিগত যুদ্ধে ফরাসী জনগণ অনুভব করত, তারা নিজেদের গৃহ সম্পদ—জীবনে যা কিছু তাদের প্রিয়—তারই জন্য লড়াই কর্‌ছে; এবং তারা আলসাসলরেনকে ফরাসী অঞ্চল বলে মনে করত, তার পুনরুদ্ধারও যুদ্ধের অন্যতম

৭০