পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে আমাদের এ যুদ্ধে রাশিয়ার ক্ষতি এবং তার যুদ্ধপণ্য উৎপাদনের ক্ষমতা বিচার করে দেখতে হবে। সৈন্য ও সমরোপকরণের দিক থেকে রাশিয়ার ক্ষতি হয়েছে অপরিমেয়। কাজেই ভবিষ্যতে তারা সীমাবদ্ধ যুদ্ধ-প্রচেষ্টা করতে পারবে। মার্শাল ষ্টালিনের চমৎকার প্রচারকার্য্যের দরুণ জনগণের মনোবল এত বেড়ে গেছে যে, তারা ক্ষতি সহ্য করে এখনও যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারছে। কিন্তু এতদিন তারা যুদ্ধ করছিল মাতৃভূমির জন্যে— নিজেদের গৃহ-সম্পদ রক্ষার জন্যে। রাশিয়ার বাইরে তাদের সে যুদ্ধ-স্পৃহা থাকবে না। তা ছাড়া জার্ম্মানবাহিনী ষ্টালিনগ্রাড অভিযানের সময় যেসব অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছিল, রুশবাহিনীও সেই সব অসুবিধার সম্মুখীন হবে। কাজেই, ১৯৩৯এর সীমারেখায় পৌঁছানোর পর সোভিয়েট-বাহিনী খুব বেশী অগ্রসর হতে পারবে বলে আমার মনে হয় না। আর একথাও মনে রাখতে হবে, মিত্রপক্ষের যদি জয়ই হয়, তবে ইউরোপের ভাগ্য কি রকম দাঁড়াবে সে সম্বন্ধে ইঙ্গ-মার্কিণ শক্তিদ্বয় এবং সোভিয়েটের মধ্যে কোন বোঝাপড়া হয়নি। কার্য্যতঃ ইউরোপের বহু অঞ্চলে একপক্ষে ইঙ্গ-মার্কিণদের অভিপ্রায় এবং অপরপক্ষে সোভিয়েটের অভিপ্রায় সম্পূর্ণ পরস্পর বিরোধী। এই প্রসঙ্গে আরও উল্লেখযোগ্য এই যে, ইঙ্গ-মার্কিণরা এখন নিজেদের ইউরোপীয় অভিযানকে সরবে প্রচার করছে বটে, কিন্তু সোভিয়েট পররাষ্ট্র-বিভাগের মুখপত্র “ওয়ার এণ্ড ওয়ার্কিং ক্লাস” পত্রিকা তথাকথিত দ্বিতীয় রনাঙ্গণকে ছোট করে দেখছে এবং ইঙ্গ-মার্কিণদের সতর্ক করে দিয়েছে, তারা যদি রণাঙ্গনের বিস্তৃতি সাধন না করে ও ফ্রান্সে আরও সৈন্য ও সমরোপকরণ নিয়োজিত না করে, তবে একদিন জার্ম্মান-বাহিনীর হাতে তাদের অত্যন্ত বিপদে পড়তে হতে পারে।

 আরও লক্ষ্য করার বিষয়, ইঙ্গ-মার্কিণ আফ্রিকা ও এশিয়ায়

৭৮