পাতা:দীনবন্ধু গ্রন্থাবলী.djvu/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবীন তপস্বিনী ১২৩ চক্ষের জলে বুক ভেসে যাচ্চে। প্রাণনাথ, চক্ষের জল মোচন কর, দাসীকে গ্রহণ কর, দাসীকে পদসেবায় নিযুক্ত কর, দাসীর মনোরথ পূর্ণ কর । রাজা। প্রাণাধিকে, স্নেহময়ি, আমার দোষের কি মার্জন আছে ? তবে তোমার প্রেম বিপুল পয়োধি, তোমার স্নেহের সীমা নাই, এই বিবেচনায় জীবিত থাকতে বাসনা হচ্চে। আমি তোমায় যার পর নাই অসুখী করিচি, কিন্তু তুমি সুখময়ী, তোমার চিত্ত নিৰ্ম্মল, তোমার আত্মা পবিত্র, তুমি সতত আমার সুখ অনুসন্ধান করেচ । তুমি অতঃপরও আমায় স্থখী করবে তার সন্দেহ কি ? বিজয় । ( রাজার চরণ ধরিয়া ) পিত: রোদন সম্বরণ করুন ; বাবা অার কাদবেন না ; গাত্ৰোখান করুন ; রাজসিংহাসনে উপবিষ্ট হন ; আমি পরমানন্দে মনের সুখে আপনার চরণ সেবা করি । বাবা ! আপনার পাদপদ্ম দর্শন করে আমার জন্ম সফল হলো, আমার প্রাণ প্রফুল্ল হলো— শিশুকালে যদি কোন দিন আদো আদে বোলে বাবা বলতেম, আমার চিরহুঃখিনী জননীর চক্ষে অমনি শত ধারা বহিত, শু্যামা আমার মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরতে, এমত স্নেহপূর্ণ বিমল বাবা শব্দ আমায় বলতে দিত না ; আজ আমার শুভ দিন, আজ আমার জীবন সার্থক, আজ আমি প্রেমাম্পদ পরম উপাস্য পিতার পাদপদ্ম দর্শন করলেম । আর আমি অনাথ নই, আর আমি বনবাসী নই, আর আমি কাঙ্গালিনীর ছেলে নই, আমি পুত্রগতপ্রাণ পিতাকে প্রাপ্ত হইচি । রাজা । ( বিজয়কে আলিঙ্গনপুৰ্ব্বক মুখ চুম্বন করিয়া ) আহা ! যার পুত্র আছে সেই জানে পুত্রমুখ চুম্বন করিলে কি লোকাতীত পরম প্রীতি জন্মায়—( বিজয়ের মুখ চুম্বন ) আহ। পুত্রের মুখাবলোকন করিলে চক্ষের পল্লব পড়ে না, ইচ্ছা হয়