পাতা:দীনবন্ধু গ্রন্থাবলী.djvu/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

lo'o দীনবন্ধু-গ্রন্থাবলী ক্লেশকর ইতিহাস রাজনারায়ণ বসুর ‘সেকাল আর একাল’ ও ‘আত্মজীবনচরিতে’ এবং শিবনাথ শাস্ত্রীর ‘রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ পুস্তকে পাওয়া যাইবে । মধুসূদন ও র্তাহার কয়েক জন সহপাঠীর নাম আজিও সুরা সংসর্গে কলঙ্কিত হইয় আছে । ‘সধবার একাদশী’র নিমে দত্ত চরিত্রকে এই কারণেই অনেকে মধুসূদনের আদর্শে রচিত—এইরূপ ধারণ করিয়া থাকেন । এই প্রসঙ্গে স্বয়ং দীনবন্ধুর জবাবদিহি এই ছিল, “মধু কি কখনও নিম হয় ।” দীনবন্ধু এই নাটকটিকে শুধু স্বরাপান লইয়াই বিয়োগান্ত করিয়া তুলেন নাই, বেশ্বাশক্তির প্রতিও কঠোর ইঙ্গিত করিয়াছেন । সমাজ-সংস্কারের দিক দিয়া এই পর্য্যন্ত । আসলে শিল্পসৃষ্টি হিসাবে ‘সধবার একাদশী দীনবন্ধুর সার্থকতম নাটক, ‘নীল-দৰ্পণ অপেক্ষ এখানেই ইহার শ্রেষ্ঠত্ব । দীনবন্ধু এই নাটকটিতে স্বীয় ক্ষমতার চরম প্রকাশ দেখাইয়াছেন । মনুষ্যচরিত্রে তাহার অভিজ্ঞতাপ্রসূত নির্লিপ্ততা বা detachment এই ক্ষুদ্র নাটকটিকে প্রায় শেক্সপীরীয় করিয়া তুলিয়াছে। বস্তুতঃ সকল দিক বিচার করিয়া দেখিলে বাংলা ভাষায় একমাত্র ‘সধবার একাদশীকেই খাটি নাটক আখ্যা দেওয়া যায়। ইহার চরিত্রসমাবেশ ও বিকাশ, বাচন-ভঙ্গী, ঘটনা-প্রবাহ এবং অবশ্বস্তাবী পরিণতি পাঠকের মনে বিন্দুমাত্র সন্দেহের উদ্রেক করে না, বরঞ্চ বাস্তবতায় বিস্মিত করিয়া তোলে। ‘সধবার একাদশী’র বাৰ্ত্তালাপ অথবা ঘটনা-সংস্থান কুত্ৰাপি নাটকীয় হইয়া উঠে নাই, স্বাভাবিক পরিণতি কোথাও ক্ষুন্ন হয় নাই। এই প্রসঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্রের নিম্নোদ্ধৃত উক্তি স্মরণীয়— দীনবন্ধুকে রাজকাৰ্য্যামুরোধে, মণিপুর হইতে গঞ্জাম পৰ্য্যন্ত, দাৰ্জিলিঙ হইতে সমুদ্র পর্য্যন্ত, পুনঃ পুনঃ ভ্রমণ করিতে হইয়াছিল । কেবল পথ ভ্রমণ বা নগর দর্শন নহে, ডাকঘর দেখিবার জন্য গ্রামে গ্রামে যাইতে হইত। লোকের সঙ্গে