পাতা:দীর্ঘকেশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ।

 আমার কথা শুনিয়া ডুবারিদ্বয় বহুকষ্টে ঐ মৃতদেহটা জল হইতে তীরে উঠইয়া দিল। দেখিলাম, উহা একটী স্ত্রীলোকের মৃতদেহ, কিন্তু বিবর্জ্জিত মস্তক। আরও দেখিলাম, ঐ মস্তকহীন মৃতদেহের সহিত তিনটী জলপূর্ণ বৃহৎ কলসি রজ্জু দ্বারা তিন স্থানে বাঁধা আছে, কিন্তু মৃতদেহটী এরূপভাবে পচিয়া গিয়াছে যে, তাহার যেস্থানে হস্ত স্পর্শিত হইতেছে, সেইস্থানের মাংস গলিয়া পড়িতেছে; ও উহা হইতে এরূপ দুর্গন্ধ বাহির হইতেছে যে, সেইস্থানে ক্ষণকালের জন্য অবস্থান করিতে পারে কাহার সাধ্য।

 পূর্ব্বে আমরা এই পুষ্করিণীতে দেহবিহীন স্ত্রীমুণ্ড প্রাপ্ত হইয়াছিলাম, এখন মস্তকবিহীন স্ত্রীদেহ প্রাপ্ত হইয়া বুঝিতে পারিলাম, যাহার মস্তক প্রাপ্ত হইয়াছিলাম, এ তাহারই দেহ। সুতরাং এ সম্বন্ধে নূতন করিয়া আর আমাদিগকে অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইতে হইল না; কারণ আমরা পূর্ব্ব হইতেই এই অনুসন্ধানে নিযুক্ত ছিলাম।

 ঐ স্থানে ঐ মৃতদেহটী যখন আমরা উত্তমরূপে অবলোকন করিতেছি, সেই সময়ে আমাদিগের একজন ঊর্দ্ধতন কর্ম্মচারী সেইস্থানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তিনি আমাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, পূর্ব্বে এই পুষ্করিণীতেই দীর্ঘকেশী স্ত্রীলোকের মস্তক পাওয়া গিয়াছিল না?

 আমি। হাঁ।