পাতা:দীর্ঘকেশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দীর্ঘকেশী।
৩৫

লইয়া যে স্থানে ঐ মস্তক রক্ষিত ছিল সেই স্থানে যাইতে কহিল।

 যে কার্য্য আমাকে করিতেই হইত, যে কার্যের নিমিত্ত উহারা অসম্মত হইলে যে কোন উপায়ে হউক উহাদিগকে লইয়া যাইতেই হইত, সেই কার্য্যের নিমিত্ত আমাকে আর কোনরূপ কষ্টই করিতে হইল না, উহারাই বিশেষ আগ্রহের সহিত আমাকে লইয়া যাইতে লাগিল।

 যে স্থানে ডাক্তার সাহেব ঐ মস্তক রাখিয়াছিলেন, আমি উহাদিগের তিনজনকেই সেইস্থানে লইয়া গেলাম, ও ঐ মস্তক উহাদিগকে দেখাইলাম। ঐ মস্তক যদিচ সেই সময় বিকৃত অবস্থায় পরিণত হইয়াছিল, তথাপি উহা দেখিবামাত্র উহারা একেবারে চীৎকার করিয়া উঠিল। উহাদিগের চীৎকার শুনিয়াই আমি যেন বুঝিতে পারিলাম যে, ঐ মস্তক ঐ বৃদ্ধ ইহুদির জ্যেষ্ঠ কন্যা ভিন্ন অপর কাহারও নহে। কিছুক্ষণ আর্ত্তনাদ করিবার পর উহারা একটু স্থির হইল। তখন আমি উহাদিগকে স্পষ্ট করিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম। উহারা কহিল, ঐ মস্তক তাহাদের কন্যার মস্তক, আরও কহিল, সেই চামড়াওয়ালাই উহাকে কোন কারণে হত্যা করিয়া উহার মস্তক দেহ হইতে বিচ্ছিন্ন করতঃ দীঘির জলে নিক্ষেপ করিয়াছে।

 এত দিবস পরে দেখিলাম, আজ আমাদিগের কার্য্য সিদ্ধি হইবার উপায় হইল। যখন মৃতদেহ সনাক্ত হইল, তখন এই মোকদ্দমার কিনারা হইতে আর বাকি থাকিল না। যে স্থান হইতে এই কার্য্য সম্পন্ন হইয়াছে, এখন তাহাও যেন বুঝিতে পারিলাম। বুঝিলাম, বৃদ্ধ যাহা কহিতেছে, তাহাই প্রকৃত।