পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিধু রমেশের হইয়া উত্তর দিল-ফুটবল এখানে কে খেলবে ৫ অনেকে চােখেও দেখেনি। তবে ও খেয়া শিখে নিতে পারবে চট করে। গাছে উঠতে, সঁতার দিতে, দৌড়াদৌড়িতে ও খুব মজবুত। বাড়ি ফিরিয়া পৰ্যন্ত নিধুর মায়ের মন ছটফট করিতে লাগিল, জজবাবুর বাড়ি যে তিনি ও তঁহার ছেলেরা এত খাতির পাইয়া আসিল, কথাটা কাহার কাছে গল্প করেন । তঁহার জীবনে এত বড় সম্মান আর কখনো কেহ তঁহাকে দেয় নাই । ওদের দরের লোকের সঙ্গে মিশিয়াছেনই বা কবে ? পুকুরের ঘাটে গা ধুইতে গিয়া দেখিলেন পুর্বপাড়ার প্রৌঢ় জগোঠাকরুণ বাসন মাজিতেছেন । , জগোঠাকরুণ গাবিত ও ঝগড়াটে প্ৰকৃতির বলিয়া গ্রামের সকলেই তঁহাকে সমীহ করিয়া চলে। তাহার উপর জগোঠাকরুণের অবস্থাও ভালো । কিন্তু কথাটা যে না বলিলেই নয়। নিধুর মা সহজভাবে ভূমিকা ফাদিলেন। -ও দিদি, আজ যে এত দেরিতে বাসন মাজচ ? জগোঠাকরুণ বাসনের দিকে চোখ রাখিয়াই বলিলেন-সময় পাইনি। আজ ওবেলা দুজন কুটুম্ব এল বাড়িতে, তাদের জন্যে রান্নাবান্না করতে দেরি হয়ে গেল। তারপর বড় ছেলে এসে বললে-মা, খাবার তৈরি করে দাও, আটঘরার হাটে যাব। এই সব করতে বেলা গেল একেবারেনিধুর মা বলিলেন-আমারও আজ বড় দেরি হয়ে গেল। অন্য দিন এর আগেই ঘাট সেরে চলে যাইজগোঠাকরুণ চুপ করিয়া আপন মনে বাসন মাজিতে লাগিলেন। নিধুর মা পুনরায় বলিলেন-মধু কি চমৎকার গান করলে দিদি ! জগোঠাকরুণ মুখ তুলিয়া বলিলেন-কে ? -এই যে জাজাবাবুর মেয়ে মঞ্জু। ওরা আজ খুব খাতির করেচে। নিধুকে । 8O