পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বাস লেখাপড়া করিতেছে-একদিকে মক্কেলদের বসিবার নিমিয় একখানি কাঠের বেঞ্চি পাতা। একটা পুরোনো আলমারিতে সামান্য দামের টিপকলের তালা লাগানো-ঘরের দোরের বা দিকে তামাক খাইবার সরঞ্জাম, জায়গাটা টিকের গুড়ো, তামাকের গুল, আধাপোড়া দেশলাই-কাটি পড়িয়া রীতিমতো নোংরা। দেয়ালে স্থানে স্থানে পানের পিচের দাগ । নিধু বাহিরে গিয়া বসিতেই কৃপারাম বিশ্বাস অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে দাত বাহির করিয়া বলিল-আম্বন বাবু এ শনিবারে বুঝি বাড়ি যাননি ? বেশ। বাবু, সোনাতনপুরের মারামারির কেসে কি আপনার কাছে লোক গিয়েছিল ? নিধু বলিল-না, যদুবাবুর কাছে গিয়েচে এক পক্ষ শুনেচি-আমাদের জামিননামা সম্বল, সেটা পাবই। পক্ষ কি আমাদের মতো জুনিয়ার মোক্তারের কাছে যায় ? কৃপারাম বিনয়ে গলিয়া গিয়া দুহাত কচলাইয়া বলিতে লাগিল-হেঁ হেঁ বাবু, ওটা কি কথা-আপনার মতো লোক-ইত্যাদি। নিধুর মনে হইল কৃপারাম যে তাহাকে অতখানি বিনয় প্ৰদৰ্শন করিয়া খাতির করিতেছে-ইহার মূলে রহিয়াছে তাহার সহিত সাধন-মোক্তারের পরিবারের বৈবাহিক সম্বন্ধের সম্ভাবনা। নতুবা প্ৰবীণ সাধন-মোক্তারের মুহুরী ঘুঘু কৃপারাম বিশ্বাসের কথা নয় তাহার প্রতি এতটা হাত কচলাইয়া সন্ত্রম দেখানো। কই, বার-লাইব্রেরীতে গত দেড় মাসের মধ্যে কৃপারাম কোনোদিন তাহার সঙ্গে দুটি কথাও বলে নাই তো ! সাধন বাড়ির ভিতর হইতে আসিয়া বলিলেন-একটা বালিশ দেবে, কি নিধিরাম ? কষ্ট হচ্চে বসতে ! নিধিরাম হাসিয়া বলিল-আজ্ঞে না, বালিশ কি হবে। আমায় ? আপনি বরং একটা আনান 6)