পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরদিন সকালে উঠিয়া নিধুমনের মধ্যে কেমন যেন একটা বেদনা অনুভব করিল। কিসের বেদনা ভালো করিয়া বোঝাও যায় না ; অথচ মনে হয় যেন সারা দুনিয়া শূন্য হইয়া গিয়াছে; অন্য কোথাও গেলে কিছু নাই কোথাও । আছে কেবল এখানে মধুদের বাড়ি । মধুদের বাড়ি ছাড়িয়া বিশ্বের কোথাও গিয়া সুখ নাই। বাড়ি হইতে বিদায় লইয়া নিধু উদাস মনে পথ চলিতে লাগিল। ভাদ্রমাসের মাঝামাঝি, পথের ধারে ঝোপে বনকলসী ফুটিয়াছে-বাশঝাড়ের ও বড় বড় বিলিতি চটকা গাছের মাথায় সকালের নীল আকাশ, পূজার আর বেশি দেরি নাই, স্থলে, জলে, আর্কাশে, বাতাসে আসন্ন পূজার আভাস যেন। পাড়াগায়ের ছেলে নিধুত্ব তাঁহাই মনে হইল। কৃষকেরা পাট কাটিতে শুরু করিয়াছে, পথের ধারে যেখানে যত খানা ডোবা --তাহাতেই পাঁচালো পাটের আঁটি। দুর্গন্ধে এখন হইতেই পথ চলা দায়। নিধু অন্যমনস্কভাবে চলিতে চলিতে প্রায় নােনাখালির বাঁওড়ের কাছে আসিয়া পড়িল। এখান হইতে টাউন আর মাইল দুই-নিধু বাওড়ের ধারে ঘাসের উপর বসিল । আজ এখনো সকাল আছে। তাড়াতাড়ি র্কোর্টে হাজির হইয়া কি হইবে ? মক্কেলের তো বড় ভিড় ।