পাতা:দুই বাড়ি - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামতারণ চৌধুৰী সকালে উঠিয়া বড় ছেলে নিধুকে বলিলেন-নিধে, একবার হরি বাগদীর কাছে গিয়ে তাগাদ করে দ্ব্যাখ দিকি । আজ কিছু না আনলে একেবারেই গোলমাল। নিধুর বয়স পঁচিশ, এবার সে মোক্তারী পরীক্ষা দিয়া আসিয়াছে, সম্ভবত পাশও করিবে। বেশ লম্বা দোহারা গড়ন, রঙ খুব ফর্গা না হলেও তাহাকে এ পর্যন্ত কেউ কালো বলে নাই। নিধু কি একটা কাজ করিতেছিল, বাবার কথায় আসিয়া বলিল-সে আজ কিছু দিতে পারবে না। —দিতে পারবে না তাে আজ চলবে কি করে ? তুমি বাপু একটা উপায়। খুজে বাব কর, আমার মাথায় তো আসচে। না । -কোথায় যাব বলুন না বাবা ? একটা উপায় আছে-ও পাড়ার গোঁসাইখুড়োর বাড়িতে গিয়ে ধার চেয়ে আনি না হয়—সেখানে বাবা আর গিয়ে কাজ নেই-তুমি একবার বিন্দুপিলীয় বাড়ি যাও দিকি । গ্রামের প্রান্তে গোয়ালাপাড়া। বিন্দু গোয়ালিনীর ছোট্ট চালাঘরখানি গোয়ালাপাড়ার একেবারে মাঝখানে । তাহার স্বামী কৃষ্ণ ঘোষ এ গ্রামের মধ্যে একজন অবস্থাপন্ন লোক ছিল-বাড়িতে সাত-আটটা গোলা, পুকুর, প্ৰায় একশোর কাছাকাছি গরু ও মহিষ-কিছু তেজারিতি কারারও • ছিল সেই সঙ্গে। দুঃখের মধ্যে ছিল এই যে কৃষ্ণ ঘোষ নিঃসন্তান-অনেক পূজামানত করিয়াও আসলে কোনো ফল হয় নাই। সকলে বলে স্বামীীয়, মৃত্যুর পরে বিন্দুর হাতে প্ৰায় হাজার পাঁচেক টাকা পড়িয়াছিল। 槛