পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
দুই বোন

চারিদিক থেকেই সে একটা অব্যক্ত সমর্থন পাচ্ছে। শশাঙ্ক একরকম ঠিক করে নিয়েছে, শর্মিলার মনে বিশেষ কোনাে ব্যথা নেই, ওদের দুজনকে একত্র মিলিয়ে খুশি দেখেই সে খুশি। সাধারণ মেয়ের পক্ষে এটা সম্ভব হােতে পারত না কিন্তু শর্মিলা যে অসাধারণ। শশাঙ্কর চাকরির আমলে একজন আর্টিস্ট রঙিন পেনসিল দিয়ে শর্মিলার একটা ছবি এঁকেছিল। এতদিন সেটা ছিল পাের্টফোলিয়াের মধ্যে। সেইটেকে বের করে বিলিতি দোকানে খুব দামি ফ্যাশানে বাঁধিয়ে নিয়ে আপিসঘরে যেখানে বসে ঠিক তার সমুখে দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখলে। সামনের ফুলদানিতে রোজ মালী ফুল দিয়ে যায়।

 অবশেষে একদিন শশাঙ্ক বাগানে সূর্যমুখী কী রকম ফুটেছে দেখাতে দেখাতে হঠাৎ ঊর্মির হাত চেপে ধরে বললে, “তুমি নিশ্চয় জানাে, তােমাকে আমি ভালােবাসি। আর তােমার দিদি, তিনি তাে দেবী। তাঁকে যত ভক্তি করি জীবনে আর কাউকে তেমন করিনে। তিনি পৃথিবীর মানুষ নন, তিনি আমাদের অনেক উপরে।”

 এ-কথা দিদি বারবার ক’রে ঊর্মিকে স্পষ্ট বুঝিয়ে