পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বোন
১৩

 ব্যবসা চলল বেগে। এর আগে চাকরির দায়িত্বে শশাঙ্ক কাজ করেছে, সে-দায়িত্বের সীমা ছিল পরিমিত। মনিব ছিল নিজের বাইরে, দাবি এবং দেয় সমান সমান ওজন মিলিয়ে চলত। এখন নিজেরই প্রভুত্ব নিজেকে চালায়। দাবি এবং দেয় এক জায়গায় মিলে গেছে। দিনগুলো ছুটিতে কাজেতে জাল-বোনা নয়, সময়টা হয়েছে নিরেট। যে দায়িত্ব ওর মনের উপর চেপে সেটাকে ইচ্ছে করলেই ত্যাগ করা যায় ব’লেই তার জোর এত কড়া। আর কিছু নয়, স্ত্রীর ঋণ শুধতেই হবে, তার পরে ধীরে সুস্থে চলবার সময় পাওয়া যাবে। বাঁ হাতের কবজিতে ঘড়ি, মাথায় সােলার টুপি, আস্তিন গােটনো, খাকির প্যাণ্ট পরা, চামড়ার কোমরবন্ধ আঁটা, মােটা সুকতলাওআলা জুতাে, চোখে রােদ বাঁচাবার রঙিন চশমা,—শশাঙ্ক উঠে পড়ে লেগে গেল কাজে। স্ত্রীর ঋণ যখন শােধ হবার কিনারায় এল, তখনো ইষ্টিমের দম কমায় না, মনটা তখন উঠেছে গরম হয়ে।

 ইতিপূর্বে সংসারে আয়ব্যয়ের ধারাটা বইত একই খাদে, এখন হােলাে দুই শাখা। একটা গেল ব্যাঙ্কের দিকে, আর একটা ঘরের দিকে। শর্মিলার বরাদ্দ পূর্বের মতােই আছে, সেখানকার দেনাপাওনার