পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
দুই বোন

 নীরদ মুখুজ্যের এ বাড়িতে গতিবিধি ছিল। হেমন্ত ওর নাম দিয়েছিল আউল, অর্থাৎ প্যাঁচা। অর্থ ব্যাখ্যা করতে বললে সে বলত, ও মানুষটা পৌরাণিক, মাইথলজিকাল, ওর বয়েস নেই কেবল আছে বিদ্যে, তাই আমি ওকে বলি মিনার্ভার বাহন।

 নীরদ এদের বাড়িতে মাঝে মাঝে চা খেয়েছে, হেমন্তর সঙ্গে তুমুল তর্ক চালিয়েছে, মনে মনে ঊর্মিকে নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছে কিন্তু ব্যবহারে করেনি যে তার কারণ, এক্ষেত্রে যথােচিত ব্যবহারটাই ওর স্বভাবে নেই। ও আলােচনা করতে পারে আলাপ করতে জানে না। যৌবনের উত্তাপ ওর মধ্যে যদি বা থাকে তার আলােটা নেই। এইজন্যেই, যেসব যুবকের মধ্যে যৌবনটা যথেষ্ট প্রকাশমান তাদের অবজ্ঞা ক’রেই ও আত্মপ্রসাদ লাভ করে। এই সকল কারণে ওকে ঊর্মির উমেদারশ্রেণীতে গণ্য করতে কেউ সাহস করেনি। অথচ সেই প্রতীয়মান নিরাসক্তিই বর্তমান কারণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ওর ’পরে উর্মির শ্রদ্ধাকে সম্ভ্রমের সীমায় টেনে এনেছিল।

 রাজারাম যখন স্পষ্ট করেই বললেন যে, যদি মেয়ের মনে কোনাে দ্বিধা না থাকে তবে নীরদের সঙ্গে তার