পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
দুই বোন

কোমর-বাঁধা ভারি ভারি কথা হালকা হয়ে যায়, মােটা মােটা আওয়াজেই ধরা পড়ে বলবার বিষয়ের কমতি।

 নীরদের যে ভাবটা কাছে থাকতে ও সয়ে গিয়েছিল সেইটে দূরের থেকে ওকে সবচেয়ে বাজে। লােকটা একেবারেই হাসতে জানে না। চিঠিতে সবচেয়ে প্রকাশ পায় সেই অভাবটা। এই নিয়ে শশাঙ্কের সঙ্গে তুলনা ওর মনে আপনিই এসে পড়ে।

 তুলনার একটা উপলক্ষ্য এই সেদিন হঠাৎ ঘটেছে। কাপড় খুঁজতে গিয়ে বাক্সের তলা থেকে বেরােল পশমে-বােনা একপাটি অসমাপ্ত জুতো। মনে পড়ে গেল চার বছর আগেকার কথা। তখন হেমন্ত ছিল বেঁচে। ওরা সকলে মিলে গিয়েছিল দার্জিলিঙে। আমােদের অন্ত ছিল না। হেমন্তে আর শশাঙ্কে মিলে ঠাট্টাতামাশার পাগলা-ঝােরা বইয়ে দিয়েছিল। ঊর্মি তার এক মাসির কাছ থেকে পশমের কাজ নতুন শিখেছে। জন্মদিনে দাদাকে দেবে ব’লে একজোড়া জুতাে বুনছিল। তা নিয়ে শশাঙ্ক ওকে কেবলই ঠাট্টা করত, বলত, “দাদাকে আর যাই দাও, জুতো নয়, ভগবান মনু বলেছেন ওতে গুরুজনের