বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:দুই শিষ্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই শিষ্য।
১১

আমার বড় দুঃখ হইল। তিনি ভাবিয়াছিলেন, আমি বুঝি অবজ্ঞা করিয়াই ব্যাঘ্রচর্ম্মের উপর উপবেশন করিতেছি না।

 এই মনে করিয়া আমি লজ্জিতভাবে উত্তর করিলাম, “আমি সে জন্য দাঁড়াইয়া নহি। আপনার সহিত কেমন করিয়া একাসনে উপবেশন করিব তাহাই ভাবিতেছি।”

 বাধা দিয়া মনোহরগিরি বলিলেন “সে কি কথা? আপনি আমাপেক্ষা নিকৃষ্ট কিসে?”

 এই বলিয়া তখনই গাত্রোখান করিলেন এবং আমার হস্ত ধারণ করিয়া ব্যাঘ্রচর্ম্মের উপর টানিয়া লইলেন এবং অগ্রে আমাকে বসাইয়া পরে আমার পার্শ্বে উপবেশন করিলেন।

 কিছুক্ষণ পরে তিনি বলিলেন, “আপনি ব্রাহ্মণ, আমার নমস্য। আমার সহিত একাসনে বসিবার আপনার সম্পূর্ণ অধিকার আছে।”

 আমি কোন উত্তর করিলাম না, ঈষৎ হাসিলাম মাত্র। পরে তাঁহার দিকে চাহিয়া বলিলাম, “আপনার অপরাপর শিষ্যগণের মুখ দেখিয়া স্পষ্টই বোঝা যাইতেছে যে, বেহারীগিরি এখনও প্রত্যাগমন করেন নাই।”

 এক দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া মনোহরগিরি উত্তর করিলেন, “আপনার অনুমান সত্য। যদি বেহারী ফিরিয়া আসিত, তাহা হইলে কি এ মন্দির আজ এত নীরব থাকিত? বেহারী অভাবে আমার আর আর সকল শিষ্যই যেন মর্ম্মাহত হইয়া পড়িয়াছে। তাহারা মুখে কোন কথা না বলিলেও তাহাদের হৃদয় যে ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, তাহাদের বাহিক অবস্থা দেখিলেই বুঝিতে পারা যায়।”

 তাঁহার কথা শেষ হতে না হইতে দুইজন গৈরিকবসনধারী যুবক সেই গৃহে প্রবেশ করিল। মনোহর তাহাদিগকে নির্দ্দেশ