আছে। নতুবা বেহারীগিরি বালক নহেন যে, পথ ভুলিয়া আর কোথাও গিয়া পড়িবেন। আমার বড় ভাল বোধ হইতেছে না।
এই বলিয়া আমি গাত্রোথান করিলাম। সঙ্গে সঙ্গে মনোহরগিরিও উঠিলেন এবং আমার পশ্চাৎ পশ্চাৎ মন্দিরের দ্বারদেশ পর্য্যন্ত আগমন করিলেন। দ্বারে আসিয়া দেখিলাম, একখানি সেকেণ্ড ক্লাসের ভাড়াটীয়া গাড়ী অপেক্ষা করিতেছে। মনোহর আমাকে তাহাতে আরোহণ করিতে অনুরোধ করিলেন। পরে বলিলেন, “এখন আপনিই আমাদের একমাত্র অবলম্বন। যাহাতে বেহারীর সন্ধান হয়, তাহা আপনিই করিবেন। অর্থের অভাব বিবেচনা করিবেন না। যদি ইহার ভিতর কোন প্রকার চাতুরি কি প্রতারণা দেখিতে পান, তাহা হইলে প্রতারক যাহাতে আইন অনুসারে দণ্ডনীয় হয়, সে বিষয়ে আপনি মনোযোগ করিবেন। আমরা অনেক দিন সংসার ত্যাগ করিয়াছি। সংসারের কুটিলত। অনেক কাল ভুলিয়া গিয়াছি। আপনারা যতদূর বুঝিতে পারিবেন, আমরা সেরূপ পারিব না। অধিক বলা বাহুল্য মাত্র।”
মনোহরগিরি এই কথা বলিয়া এক দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন। আমি স্পষ্টই বুঝিতে পারিলাম, তিনি বেহারীর শোকে কাতর হইয়া পড়িয়াছেন। মিষ্ট বাক্যে তাঁহাকে সান্ত্বনা করিলাম। বলিলাম, আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করিব। যাহাতে দোষী উচিত মত শাস্তি পায়, তাহার উপায় করিব।
আমার কথায় তিনি কিছু আশ্বস্ত হইলে আমি কোচমানকে শকট চালনা করিতে আদেশ করিলাম। দুষ্পাঠ্য প্রায় দ্বিপ্রহরের সময় থানায় ফিরিয়া আসিলাম।