বিশ্বাস হইল না। আমার বোধ হইল, কেদারনাথ বাড়ীতেই আছেন। তিনিই তাঁহার পুত্রকে যে ঐরূপ শিখাইয়া দিয়াছেন, তাহাও আমার বুঝিতে বাকি রহিল না। আমি সুরেন্দ্রকে আর কোন কথা বললাম না। বলদেবকে সঙ্গে লইয়া তখনই তথা হইতে বাহির হইলাম এবং শকটারোহণে কিছুদুর প্রত্যাগমন করিলাম।
কেদারনাথের বাড়ী হইতে প্রায় অর্দ্ধ ক্রোশ দূরে আসিয়া, আমি কোচমানকে গাড়ী থামাইতে আদেশ করিলাম। গাড়ী স্থগিত হইলে, আমি বলদেবকে সেই স্থানে রাখিয়া স্বয়ং নিকটস্থ থানায় গমন করিলাম এবং সেখানকার দারোগাবাবুর নিকট হইতে আবশ্যকীয় ছদ্মবেশ সংগ্রহ করিয়া সেইখানেই পরিধান করিলাম।
যখন সেই ছদ্মবেশ ধারণ করিয়া গাড়ীতে বলদেবের নিকট আগমন করিলাম, তখন তিনি আমায় চিনিতে পারিলেন না। আমি গাড়ীতে উঠিতে যাইতেছি দেখিয়া, তিনি অতি মিষ্ট কথায় নিষেধ করিলেন। বলিলেন, “এখনি একজন পুলিশ কর্ম্মচারীর গাড়ী। তিনি আমাকে রাখিয়া নিকটে কোথাও গিয়াছেন। নিশ্চয়ই শীঘ্র ফিরিয়া আসিবেন।”
আমি ঈষৎ হাসিয়া গাড়ীতে উঠিয়া বসিলাম। আমার পরিধানে বলদেবের মত গৈরিক বসন, গৈরিক উত্তরীয়, পায়ে খড়ম্, হস্তে এক গাছি লাঠী, গলায় ও হস্তে কতক গুলি রুদ্রাক্ষের মালা তখন আমাকে দেখিতে ঠিক সন্ন্যাসীর মতই হইয়াছিল।
আমাকে তাঁহার বাক্য অবহেলা করিতে দেখিয়া, বলদেব বিরক্ত হইলেন। তিনি কৃত্রিম কোপ প্রকাশ পূর্ব্বক বলিলেন, “মহাশয়, আমার কোন অপরাধ লইবেন না; দারোগাবাবু এখানে আসিয়া