আমার চীৎকারে একজন বাহিরে আসিলেন। তাহাকে দেখিয়াই আমার কেমন সন্দেহ হইল। বোধ হইল, তিনিই সেই বালকের পিতা। সুরেন্দ্রনাথের সহিত সেই ব্যক্তির মুখের বেশ সাদৃশ্য আছে। তিনি নিকটে আসিয়া অতি কর্কশস্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, কি চাও বাপু?”
আমি বলিলাম, “একমুষ্টি আটা।”
তিনি হাসিয়া বলিলেন, “আমিই খাইতে পাই না, তা ভিক্ষা দিব কি? যাও —এখানে কিছু হবে না।”
আমি হিন্দি ভাষায় জিজ্ঞাসা করিলাম, “নিকটে কোন দেবালয় আছে কি না?” তিনি কালভৈরবের মন্দির নির্দ্দেশ করিলেন। বলিলেন, সেখানে গমন করিলে অনায়াসে আহার সংগ্রহ করিতে পারিবে।
আমিও সুবিধা পাইলাম। ঈষৎ হাসিয়া বলিলাম, “যদি তাঁহার সহিত মন্দির-স্বামীর আলাপ থাকে, তাহা হইলে আমার নাম দিয়া একখানি পত্র দিলে ভাল হয়।” পত্রের কথায় তিনি যেন বিরক্ত হইলেন। আমিও আর সে কথা তুলিলাম না।
কিছুক্ষণ পরে আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “শুনিয়াছি, আমার পরম বন্ধু বেহারী নামে কোন সন্ন্যাসী নিকটস্থ কোন দেবালয়ে বাস করেন। আপনি জানেন কি, তিনি কোথায় থাকেন? তাঁহার ন্যায় সাধু ব্যক্তির সহিত আপনার সম্ভাব আছে কি?”
আমার কথায় তিনি যেন কি সন্দেহ করিলেন। কোন উত্তর করিলেন না,—আমার আপাদ মস্তক ভাল করিয়া নিরীক্ষণ করিলেন। শেষে অতি কর্কশভাবে বলিয়া উঠিলেন, “কে তোমার বেহারী? আমি কোন বেহারীকে জানি না।”