বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:দুই শিষ্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
দারোগার দপ্তর, ২০১ সংখ্যা।

 আ। বেহারী এখন কোথায় বলিতে পারেন।

 কে। নিশ্চয়ই মন্দিরে আছেন।

 আ। না—তিনি কাল প্রাতঃকাল হইতে মন্দিরে ফিরিয়া যান নাই।

 কেদারনাথ আশ্চর্যান্বিত হইলেন। তিনি ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন, “ধর্ম্মের ভাণ করিয়া যেহারী যে সকল কার্য্য করেন, তাহাতে তাঁহাকে অতি নীচ প্রকৃতির লোক বলিয়া বোধ হয়। হয় ত তিনি কোন স্ত্রীলোকের প্রেমে মুগ্ধ হইয়াছেন।”

 বলদেব এতক্ষণ কোন কথা কহেন নাই। কিন্তু কেদারনাথের শেষ কথা শুনিয়া তিনি আর স্থির থাকিতে পারিলেন না। চীৎকার করিয়া বলিয়া উঠিলেন, “আপনার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

 আমারও সেইরূপ বোধ হইল। আমি অতি কর্কশ স্বরে বলিয়া উঠিলাম, “যদি আপনি বেহারীর কোন সন্ধান বলিতে না পারেন, তাহা হইলে আপনাকে এখনই থানায় চালান দিব। আপনার পুত্রকেও ছাড়িয়া দিব না। আপনি পিতা হইয়া এই অল্পবয়স্ক বালককে যে প্রকার মিথ্যা কথা শিখাইয়াছিলেন, তাহাতে আপনাকেই প্রকৃত অপরাধী বলিয়া বোধ হইতেছে। হয় আপনি বেহারীর সন্ধান বলিয়া দিন, না হয় থানায় চলুন।”

 আমার কথায় কেদারনাথের ভয় হইল। তিনি অতি বিনীত ভাবে বলিলেন, “বেহারী কোথায় কেমন করিয়া বলিব?

 আ। কখন আপনার সহিত তাঁহার শেষ দেখা হয়?

 কে। বোধ হয় তখন বেলা পাঁচটা।

 আ। এই বলিলেন, দ্বিপ্রহরের পর আপনাদের দেখা হয়। তবে কি আপনারা চারিঘণ্টাকাল একত্রে ছিলেন?