খুলিয়া ফেল; তুমি অলঙ্কার পরিয়াছ, আমার চক্ষুশূল হইয়াছে।”
বিমলা ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন, “বাছা, আমার সকল আভরণ না দেখিয়া আমাকে তিরস্কার করিও না।”
এই বলিয়া বিমলা নিজ পরিধেয় বাসমধ্যে লুক্কায়িত এক তীক্ষ্ণধার ছুরিকা বাহির করিলেন; দীপপ্রভায় তাহার শাণিত ফলক বিদ্যুদ্বৎ চমকিয়া উঠিল। তিলোত্তমা বিস্মিতা ও বিশুষ্কামুখী হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “এ কোথায় পাইলে?”
বিমলা কহিলেন, “কাল হইতে অস্তঃপুরমধ্যে একজন নূতন দাসী আসিয়াছে দেখিয়াছ?”
তি। দেখিয়াছি -আশমানি আসিয়াছে।
বি। আশমানির দ্বারা ইহা অভিরাম স্বামীর নিকট নিকট আনাইয়াছি।
তিলোত্তমা নিঃশব্দ হইয়া রঙ্গিলেন; তাহার হৃদয় কম্পিত হঠতে লাগিল। ক্ষণেক পরে বিমল জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি এ বেশ অঙ্গ ত্যাগ করিবে না?”
তিলোত্তম কহিলেন, “না।”
বি। নৃত্যগীতাদিতে যাইবে না?
তি। “না।”
বি। তাহাতেও নিস্তার পাইবে না।
তিলোত্তম কাঁদিতে লাগিলেন। বিমলা কহিলেন, “স্থির হইয়া শুন, আমি তোমার নিষ্কৃতির উপায় করিয়াছি।”
তিলোত্তমা আগ্রহসহকারে বিমলার মুখপানে চাহিয়া রহিলেন।