পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবীন সেনাপতি
১৯

তথায় উপস্থিত ছিলেন; তিনি সর্বাপেক্ষা বয়ঃকনিষ্ঠ; সকলের পশ্চাতে থাকিয়া কহিলেন, “অনুমতি হইলে, এ দাসও দিল্লীশ্বরের কার্য্যসাধনে যত্ন করে।”

 রাজা মানসিংহ সস্মিত-বদনে কহিলেন, “না হবে কেন? আজ জানিলাম যে, মোগল-রাজপুত-নাম-লোপের বিলম্ব আছে। তোমরা সকলেই এ দুষ্কর কার্য্যে প্রস্তুত, এখন কাহাকে রাখিয়া কাহাকে পাঠাই?”

 একজন পারিষদ সহাস্যে কহিল, “মহারাজ! অনেকে যে এ কার্য্যে উদ্যত হইয়াছেন, সে ভালই হইয়াছে। এই উপলক্ষে সেনাব্যয়ের অল্পতা করিতে পারিবেন। যিনি সর্ব্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র সেনা লইয়া যাইতে স্বীকৃত হয়েন, তাঁহাকেই রাজ-কার্য্য-সাপনের ভার দিউন।”

 রাজা কহিলেন, “এ উত্তম পরামর্শ।” পরে প্রথম উদ্যমকারীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কত সংখাক সেনা লইয়া যাইতে ইচ্ছা কর।”

 সেনাপতি কহিলেন, “পঞ্চদশ সহস্র পদাতিবলে রাজকার্য্য উদ্ধার করিব।”

 রাজা কহিলেন, “এ শিবির হতে পঞ্চদশ সহস্র ভয় করিলে অধিক থাকে না। কোন্ বীর দশ সহস্র লইয়া যুদ্ধে যাত্রা করিতে চাহে?”

 সেনাপতিগণ নীরব রহিলেন। পরিশেষে রাজার প্রিয়পাত্র যশোবন্ত সিংহ নামক রাজপুত যোদ্ধা রাজাদেশ পালন করিতে অনুমতি প্রার্থিত হইলেন। রাজা হৃষ্টচিত্তে সকলের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতে লাগিলেন। কুমার জগৎসিংহ তাঁহার দৃষ্টি-অভিলাষী হইয়া দাঁড়াইলেন, তৎপ্রতি রাজার দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হইবামাত্র তিনি বিনীতভাবে কহিলেন,—