পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দশম পরিচ্ছেদ
মন্ত্রণার পর উদ্যোগ

 যে দিবস অভিরাম স্বামী বিমলার প্রতি ক্রূদ্ধ হইয়া তাঁহাকে গৃহবহিষ্কৃত করিয়া দেন, তাহার পরদিন প্রদোষ-কালে বিমলা নিজ কক্ষে বসিয়া বেশভূষা করিতেছিলেন। পঞ্চত্রিংশৎ বর্ষীয়ার বেশভূষা? কেনই বা না করিবে? বয়সে কি যৌবন যায়? যৌবন যায় রূপে আর মনে; যার রূপ নাই, সে বিংশতি বয়সেও বৃদ্ধা; যার রূপ আছে, সে সকল বয়সেই যুবতী। যার মনে রস নাই, সে চিরকাল প্রবীণ; যায় মনে রস আছে, সে চিরকাল নবীন। বিমলার আজও রূপে শরীর ঢল ঢল করিতেছে, রসে মন টল টল করিতেছে। বয়সে আরও রসের পরিপাক, পাঠক মহাশয়ের যদি কিঞ্চিৎ বয়স হইয়া থাকে, তবে একথা অবশ্য স্বীকার করিবেন।

 কে বিমলার সে তাম্বুলরাগরক্ত ওষ্ঠাধর দেখিয়া বলিবে, এ যুবতী নয়? তাহার কজ্জলনিবিড় প্রশস্ত লোচনের চকিত কটাক্ষ দেখিয়া কে বলিবে যে, এ চতুর্ব্বিংশতির পরপারে পড়িয়াছে? কি চক্ষু! সুদীর্ঘ; চঞ্চল; আবেশময়! কোন কোন প্রগল্‌ভযৌবনা কামিনীর চক্ষু দেখিবামাত্র মনোমধ্যে বোধ হয় যে, এই রমণী দর্পিতা; এ রমণী সুখলালসা