বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুর্গেশনন্দিনী

 মন্দিরমধ্য হইতে উত্তর হইল, “আমরা বড় ভীত হইয়াছি।”

 যুবক তখন কহিলেন, “আমি যেই হই, আমাদিগের আত্মপরিচয় আপনার দিবার রীতি নাই। কিন্তু আমি উপস্থিত থাকিতে, অবলাজাতির কোন প্রকার বিঘ্নের আশঙ্কা নাই।”

 রমণী উত্তর করিল, “আপনার কথা শুনিয়া আমার সাহস হইল, এতক্ষণ আমরা ভয়ে মৃতপ্রায় ছিলাম। এখনও আমার সহচরী অৰ্দ্ধমূচ্ছিতা রহিয়াছেন। আমরা সায়াহ্নকালে এই শৈলেশ্বর শিবপূজার জন্য আসিয়াছিলাম। পরে ঝড় আসিলে, আমাদিগের বাহক ও দাস-দাসীগণ আমাদিগকে ফেলিয়া কোথায় গিয়াছে, বলিতে পারি না।”

 যুবক কহিলেন, “চিন্তা করিলেন না, আপনারা বিশ্রাম করুন; কাল প্রাতে আমি আপনাদিগকে গৃহে রাখিয়া আসিব।” রমণী কহিল, “শৈলেশ্বর আপনার মঙ্গল করুন।”

 অর্দ্ধরাত্রে ঝটিকা-বৃষ্টি নিবারিত হইলে, যুবক কহিলেন, “আপনার এইখানে কিছুকাল কোনরূপে সাহসে ভর করিয়া থাকুন। আমি একটা প্রদীপ-সংগ্রহের জন্য নিকটবর্ত্তী গ্রামে যাই।”

 এই কথা শুনিয়া যিনি কথা কহিতেছিলেন, তিনি কহিলেন, “মহাশয়, গ্রাম পর্যন্ত যাইতে হইবে না। এই মন্দিরের রক্ষক একজন ভৃত্য অতি নিকটেই বসতি করে; জ্যোৎস্না প্রকাশ হইয়াছে; মন্দিরের বাহির হইতে তাহার কূটীর দেখিতে পাইবেন। সে ব্যক্তি একাকী প্রান্তরমধ্যে বাস করিয়া থাকে, এজন্য সে গৃহে সর্ব্বদা অগ্নি জালিবার সামগ্রী রাখে।”

 যুবক এই কথানুসারে মন্দিরের বাহিরে আসিয়া, জ্যোৎস্নার