পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কতবার মনে অনুশোচনা হয়েছে এই ভেবে যে কেন চলে আসতে গিয়েছিলুম অমন চুটি চুপি ? তখন কি বুঝেছিলুম মালতী আমায় এত ভাবাবে। কি বুঝে আখড়া ছেড়ে এ পাগলের মত ! এমনধারা খামখেয়ালী স্বভাব আমাব কেন যে চিরকাল, তাই ভাবি । আমা মাথার ঠিক নেই সবাই বলে, সত্যিই বলে। এখন বুঝেছি কি ভুলই করেছি মালতীকে కె এসে ! ওকে বাদ দিয়ে জীবন কল্পনা করতে পারছি নে-এও যেমন ঠিক, আবার এও তেমনি ঠিক যে আর সেখানে আমার ফেরা হবে না। না-মালতী, আর ফিরে যাব না। ঝুছে পেয়ে তুমি যদি অনাদর করা সইতে পারা না । তোমার খামখেয়ালী স্বভাবকে আমার ভযা হয় । তার চেয়ে এই-ই ভাল। আমার জীবনে তুমি পুকুরের ঘাটের কত জ্যোৎস্নারাত্রি অক্ষয় ক’রে দিয়েছ, সেই সব জ্যোৎস্নাৱান্ত্রি স্মৃতি, তোমার বাবার বিষ্ণুমন্দিরের কত সন্ধ্যায় প্ৰদীপ দেওয়ার স্মৃতি-তোমার সে সং আদরের স্মৃতি মৃত্যুজয়ী হয়ে থাক । S8 এক বছর কেটে গেল, আবার শ্রাবণ মাস । হঠাৎ দাদার শালার একখানা চিঠি পেলাম কলকাতা থেকে। দাদার বড় অসুখ, চিকিৎসার জন্যে তাকে আনা হয়েছে ক্যাম্বেল হাসপাতালে । পত্র পেয়ে প্ৰাণ উডে গেল। সাধুজীর কাছে বিদায় নিয়ে কলকাতায় এলাম। হাসপাতালে দাদার সঙ্গে দেখা করলাম। সামান্য ব্ৰণ থেকে দাদার মুখে হয়েছে। ইরিসিাপ্লাস, আজ সকালে অস্ত্ৰও করা হয়ে গিয়েছে। দাদা আমায় দেখে শরীরে যেন নতুন বল পেল। সন্ধ্যা পৰ্য্যায় হাসপাতালে বসে রইলাম "দাদার কাছে। দাদা বললে-এখানে বেশ খেতে দেয় জিতু রোজ প্ৰতিবেলায় একখানা বন্ড পাউরুটি আর আধ সেরা ক’রে দুধ দিয়ে যায়। দেখিস এখন এখুনি আনবে। খাবি কটি একখানা ? পরদিন সকালে আবার গেলাম হাসপাতালে। আঙুর কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম। বৌবাজারের মোড থেকে, দাদাকে ব’সে ব’সে খুওয়ালাম। দুপুরের আগে চলে আসছি, দোর। পৰ্য্যন্ত এসেছি, দাদা পেছু ডাকলে-জিতু, শোন। দাদা বিছানার ওপর উঠে বসেছে।--তার চোখ দুটিতে যেন গভীর হতাশা ও মাখানো। বললে-জিতু, তোর বৌদিদি একেবারে নিপাট ভালমানুষ, সংসারের বোঝে না । ওকে দেখিস আমি বিস্ময়ের সঙ্গে বললাম-ও কি কথা দাদা । তুমি সেরে ওঠ, তোমায় বাড়ি নিয়ে Yel