পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাওয়ার পরে পাঁচ সের নুন, আড়াই সেরা আটা, পাঁচ পোয় চিনি নিয়ে-সবাই ধার নিয়ে BDD DDuDB BB S BBDB D DDBB D S এবার এসে দাদার খাটের পাশে বসে রইলাম। একটানা বৃষ্টি-পতনের শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। মাঝে মাঝে কেবল টটেনাস ওয়ার্ড থেকে বৃষ্টির শব্দ ছাপিয়েও সেই আস্তু চীৎকারটা শোনা যাচ্ছে। একটা ছোট ছেলের টনসিল কাটা হয়েছিল-সে একবার ঘুষ ভেঙে উঠে খাবাব চাইলে । কুলিটা উঠে তাকে জল দিলে। এই কুলগুলো, ওই বুড়ো মেথরটা, নার্সের-এর ঘুমোয় কখন ? সারারাত জেগে জেগে রোগীদের ফাইফরমাশ খাটছে। দাদার অবস্থা খারাপ ব’লে সবাই এসে একবার ক’রে দেখে যাচ্ছে । নাসার্স যে কতবার এল! সবাই তটস্থ•••দাদাকে বঁাচাবার জন্যে সবারই যেন প্ৰাণপণ চেষ্টা। বঁচিলে সবাই খুশী হয়। নাস একবার আমায় বললে-তুমি একটু ঘুমিয়ে নাও বাবু। সারারাত জেগে ব’সে থাকলে অসুখ করবে তোমার । হাসপাতালটিকে আমার মনে হ’ল যেন স্বৰ্গ । আৰ্ত্তের সেবা যেখানকার মানুষে মনপ্ৰাণ দিয়ে করে, সে স্বৰ্গই। ওই বুড়ো মেথরটা এখানকার দেবদূত। যেদিন কয়েক শতাব্দী আগে শ্ৰীচৈতন্য গৃহত্যাগ করেছিলেন, কিংবা শঙ্করাচাৰ্য্য সংসারের অসারত্ব সম্বন্ধে চিন্তা দুৰ্গছিলেন—তাদের স্বপ্নে এই স্বর্গের কল্পনা ছিল । চৈতন্যদেবের সংকীৰ্ত্তনের দলে, নবদ্বীপের গঙ্গার তীরে এই বুড়ো মেথরটা যোগদান করতে পারত, তিনি ওকে কোল দিতেন, ঝাড়খণ্ডেব পথ শ্ৰীক্ষেত্র রওনা হবার সময়ে ওকে পার্শ্বচর ক’রে নিতেন। • • • রাত সাড়ে তিনটে । রাত আজ কি পোয়াবে না ? বৃষ্টি একটু থেমেছে। আকাশ কিন্তু মেঘে মেঘে। কালো । এই সময়ে দাদার নাভিশ্বাস উপস্থিত হ’ল। কলের ঘোলা জল দাদার মুখে দিলাম। কানের কাছে গঙ্গানারায়ণব্ৰহ্ম নাম উচ্চারণ করলাম। এই বিপদের সময় কি জানি কেন মালতীর কথা মনে পডল । মালতী৷ যদি এখানে থাকত ! আটঘরার অশ্বখতিলার সেই বিষ্ণুমূৰ্ত্তির কথা মনে পডল-হে দেব, দাদার যাওয়ার পথ আপনি সুগম ক’রে দিন। আপনার আশীব্বাদে তার জীবনের সকল ত্রুটি, সকল গ্লানি ধুয়ে মুছে পবিত্র হোক, যে সমূদ্র আপনার অনন্ত শয্যা, যে লোকালোক পৰ্ব্বত আপনার মেখল-সে-সব পার হয়েও বহুদূরের যে পথে দাদার আজ যাত্রা, আপনার কৃপায় সে পথ তার বাধাশূন্য হােক, নির্ভয় হোক, মঙ্গলময় হোক । পাশের বিছানার রোগী বললে--একবার মেডিকেল অফিসারকে ডাকান না ! আমি বললাম-আর মিথ্যে কেন ? তার পর আরও ঘণ্টাখানেক কেটে গেল। আমার ঘুম এসেছে, ভয়ানক ঘুম । কিছুতেই R