পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সীতার ওপর আমাদের ভারি রাগ হ’ল, সবাই জানে এ পথে ভালুকের ভয় কিন্তু সে কথা ওর মনে করিয়ে দেওয়ার দরকার কি ছিল ? বাহাদুরি দেখাবার বুঝি সময় অসমীয় নেই ? অন্ধকার ক্রমেই খুব ঘন হয়ে এল, আর খানিকটা গিয়ে সরু পায়ে-চলার পথটা বনের মধ্যে কোথায় হারিয়ে গেল-সঙ্গে সঙ্গে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হল-তেমনি কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া । শীতে হাত-পা জমে যাওয়ার উপক্রম হ’ল। গাছের ডালে শেওলা বৃষ্টিতে ভিজে এক ধরনের গন্ধ বার হয় এ আমরা সকলেই জানতাম, কিন্তু সীতা বার বার জোর ক’রে বলতে লাগল ও ভালুকের গায়ের গন্ধ।-দাদা আমাদের আগে আগে যাচ্ছিল, মাঝখানে সীতা, পেছনে আমি -হঠাৎ দাদা থমকে দাড়িয়ে গেল। সামনে একটা বৰ্ণ-তার ওপরটায় কাঠের গুড়ির পুল ছিল-পুলটা ভেঙে গিয়েছে। সেটার তোড় যেমন বেশী, চওড়াও তেমনি। পার হ’তে সাহস করা যায় না। দাদা বললে-কি হবে জিতু!•••চল পচাঙে মাসীমার কাছে ফিরে যাই। সাঁতা বললে-বাবা পিঠের ছাল তুলবে। আজ না ফিরে গেলে বাসায়। না দাদা, বাড়িই চলো । দাদা ভেবে বললে--এক কাজ করতে পারবি ? পাকদণ্ডীর পথে ওপরে উঠতে যদি পারিস -ওখান দিয়ে লিণ্টন বাগানের রাস্তা। আমি চিনি, ওপরে জঙ্গলও কম । ষাবি ? দাদা তা হ’লে খুব ভীতু তো নয়! পাকদণ্ডীব সে পথটা তেমনি দুৰ্গম, সারা পথ শুধু বন জঙ্গল ঠেলে ঠেলে উঠতে হবে, পা' একটু পিছলে গেলেই, কি বড় পাথরের চাই আলগা হয়ে খসে পড়লে আটশ' কি হাজার ফুট নীচে পড়ে চুরমার হতে হবে। অবশেষে ঘন বনের বৃষ্টিভেজা পাত-লতা, পাথরের পাশের ছোট ফার্নের ঝোপ ঠেলে আমৱা ওপরে ওঠাই শুরু করলাম।--অন্য কোনো উপায় ছিল না । কাপড়-চােপড় মাথার চুল বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে গেল-রক্ত জমে হাতৰপা নীল হয়ে উঠল। পাকদণ্ডীর পথ খুব সরু, দুজন মানুষে কোনো গতিকে পাশাপাশি যেতে পারে, বায়ে হাজার ফুট খাদ, ডাইনে ঈষৎ ঢালু পাহাড়ের দেওয়াল খাড়া উঠেছে তাও হাজার-বারোশ ফুটের কম নয়। বৃষ্টিতে পথ পিছল, কাজেই আমরা ভাইনের দেওয়াল ঘেযে-ঘেষেই উঠিছি। পথ মানুষের কেটে তৈরি করা নয় ব’লেই হোক, কিংবা এ-পথে যাতায়াত নেই বলেই হোকছোটখাটো গাছপালার জঙ্গল খুব বেশী। ডাইনের পাহাড়ের গায়ে বড় গাছের ডালপালাতে সারা পথটা বুপ সি ক’রে রেখেছে, মাঝে মাঝে সেগুলো এত নিবিড় ষে সামনে কি আছে। Œኾኖከ ኛi( ፬ ዘ হঠাৎ একটা শব্দ শুনে আমরা ক’জনেই থমকে দাঁড়ালুম। সবাই চুপ ক’রে এগালাম আমরা বুঝতে পেরেছিলাম শব্দটা কিসের। ভয়ে আমাদের বুকের স্পন্দন বস্তু হয়ে নৱা, 急镇