পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰাথনা জানানো। তাকে প্ৰসন্ন রাখলেই এদের আয় বাড়বে, দেশে খাতির বাড়বে-আমার YDD DD DBBD DBS DBBD DBBS DBBKBBYSD KLLDB TgSDBD DDS সবাই খোশামোদ করবে, মন যুগিয়ে চলবে। পাশাপাশি অমনি আমার মায়ের ছবি মনে আসে। মা কোন গুণে জ্যাঠাইমার চেয়ে কম ? মাকে চা-বাগানে দেখেছি কল্যাণী মূৰ্ত্তিতে -লোকজনকে খাওয়ানো-মাখানো, কুলীদের ছেলেমেয়েদের পুতির মালা কিনে দেওয়া, আদর-যত্ন করা, আমাদের একটু অসুখে রাত জেগে বিছানায় বসে থাকা । কাছাকাছি কোন চা-বাগানের বাঙালীবাবু সোনাদায় নেমে যখন বাগানে যেত। আমাদের বাসায় না খেয়ে যাবার উপায় ছিল না। আর সে-ই মা এখানে এদের সংসারের দাসী, পরনে ছেড়া ময়লা কাপড়, কাজ করতে পারলে সুখ্যাতি নেই, না পারলে বকুনি আছে, গালাগাল আছে-সবাই হেনস্থা করে, কারও কাছে এতটুকু মান নেই, মাথা তুলে বেড়াবার মুখ নেই। কেন, ঠাকুরকে ঘুষ দিতে পারেন না ব’লে ? আমার মনে হ’ত জ্যাঠাইমাদের শালগ্ৰামশিলা এই ষড়যন্ত্রের মধ্যে আছেন, তিনি ষোড়শোপচারে পূজো পেয়ে জ্যাঠাইমাকে বড় ক’রে দিয়েছেন, অন্য সকলের উপর জ্যাঠাইমা যে অত্যাচার অবিচার করছেন, তা চেয়েও দেখছেন না ঠাকুর । একদিন সন্ধ্যাবেলা ঠাকুরঘরে আরতি শুরু হয়েছে ; নিরু, সীতা, সেজ কাকাঙ্ক ছেলে পুলিন আর আমি দেখতে গেছি। পুরুতষ্ঠাকুর ওদের সবারই হাতে একটা ক’রে রুপোর্কাধানো চামর দিলে-আকুতির সময় তার চামর দুলুতে লাগল। আমার ও সীতার হাতে দিলে না । সীতা চাইতে গেল, তাও দিলে না। একটু পরে ধূপধুনোর ধোঁয়ায় ও সুগন্ধে দালান ভরে গিয়েছে, বুলু ও ফেণী কঁাসির বাজাচ্ছে, পুরুতষ্ঠাকুরের ছোট ভাই রাম ঘড়ি পিট্‌চে, পুরুত্ঠাকুর, তন্ময় হয়ে পঞ্চপ্রদীপে ঘিয়ের বাতি জেলে আরতি কবুছে-আমি ও সীতা ছিটের দোলাইমোড়া ঠাকুরের আসনের দিকে চেয়ে আছি-এমন সময় আমার মনে হ’ল এ দালানে শুধু আমরা এই ক’জন উপস্থিত নেই, আরও অনেক লোক উপস্থিত আছে, তাদের দেখা যাচ্ছে না, তারা সবাই অদৃশ্য। আমার গা ঘুরতে লাগল, আৰু কানের পেছনে মাথার মধ্যে একটা জায়গায় যেন কতকগুলো পিপড়ে বাসা ভেঙে বেরিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে গেল । আমি জানি, এ আমার চেনা, জানা, বহুপরিচিত 'লক্ষণ, অদৃশ্য কিছু দেখবার আগেকার অবস্থা-চা-বাগানে এ-ব্লকম কতবার হয়েছে। শরীরের মধ্যে কেমন একটা অস্বস্তি হয়-সে ঠিক ব’লে বোঝানো স্বায় না, জর আসবার আগে যেমন লোক বুঝতে পারে। এইবার জর আসবে, এও ঠিক তেমনি। আমি সীতাকে কি বলতে গেলাম, পিছু হটে গিয়ে দালানের থাম ঠেস দিয়ে দাঁড়ালাম, গা বমি-বমি ক’রে উঠলে লোকে যেমন ক’রে সে ভাবটা কাটাবার চেষ্টা করে, আমিও সেই রকম স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবার জন্যে প্ৰাণপণে চেষ্টা করতে লাগিলামকিছুতেই কিছু হ’ল না, ধীরে ধীরে পূজার দালানের তিনধারের দেওয়াল আমার সামনে থেকে 83