পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাও পিকারিঙের কাছে-তোমাকে বন্ধু বলি তাই কষ্ট হয়, নইলে তুমি উচ্ছন্ন যাও না, আমি বলতে যাব কেন ? ভবেশ চলে গেলে অনেক রাত পৰ্য্যন্ত কথাটা ভাবলাম। খৃস্টকে আমি ভক্তি করি, থুস্টের কথা বলতে ভাল লাগে, শুনতে ভাল লাগে। এতে দোষ আছে কিছু ? মহাপুরুষের কি দেশবিদেশ আছে ? রাত্রে বাড়ির মধ্যে খেতে গিয়ে দেখি আর সকলের খাওয়া হয়ে গিয়েচে । ছোট বউ অর্থাৎ শৈলদিদির ছোট জায়ের রান্নার পালা ছিল এবেলা-তিনি হাঁডিকুডি নিয়ে বসে আছেন। আমি খেতে বসলাম কিন্তু কেমন অস্বস্তি বোধ হ’তে লাগল-শৈলদিদির এই ছোট জাকে আমি কি জানি কেন পছন্দ করিনে। মেজবাউ, সেজবউকে যেমন মেজদি, সেজদি ব’লে ডাকি-ছোট বউকে আমি এ পৰ্য্যন্ত কোন কিছু ব’লে ডাকিনি। অথচ তিনি আমার সামনে বেরোন বা আমার সঙ্গে কথা বলেন। ছোট বউয়ের বয়স আমার সমান হবে, এই সতেরো আঠারো-আমি যদিও “আপনি” ব’লে কথা বলি। বাড়ির সব মেয়েরা ও বৌয়েরা জানে ষে ছোট বউয়ের সঙ্গে আমার তেমন সম্ভাব নেই। কেন আমি তঁাকে ছোট দিদি বলে ডাকিনে, শৈলদি আমায় এ নিয়ে কতবার বলেচে । কিন্তু আমার যা ভাল লাগে না, তা আমি কখনও कनि । সেদিন এক ব্যাপার হয়েচে । খেয়ে উঠে আভ্যাসমত পান চেয়েচি-কাউকে বিশেষ ক’রে সম্বোধন ক’রে নয়, যেন দেওয়ালকে বলচি এই ভাবে । ছোটবাউ আধ-ঘোমটা দিয়ে এসে পান আমার হাতে দিতে গেলেন-আমার কেমন একটা অস্বস্তি বোধ হ’ল কেন জানিনে, অন্য কারুর বেলা আমার তো এমনি অস্বন্তি বােধ হয় না ? পান দেবার সময় তাঁর আঙুলটা, আমার হাতে সামান্য ঠেকে গেল-আমি তাড়াতাড়ি হাত টেনে নিলাম । আমার সারা গা কেমন শিউরে উঠল, লেজ ও অস্বস্তিতে মনে হ’ল, পান। আর কখনও এমনভাবে চাইব না। মেজদি কি শৈলদির কাছে গিয়ে চেয়ে নেবো । সেইদিন থেকে ছোট বউকে আমি এড়িয়ে চলি । মাস-কয়েক কেটে গেল। শীত পড়ে গিয়েচে । আমি দোতলার ছাদে একটা নিরিবিলি জায়গায় রোদে পিঠ দিয়ে বসে জ্যামিতির আঁকি কষচি । সেজাদি হাসতে হাসতে ছাদে এসে বললেন-জিন্তু এস, তোমায় ওয়া ডাকচে । আমি বললুম-কে ডাকচে সেজদি ? সেজাদির মুখ দেখে মনে হ’ল একটা কি মজা আছে। উৎসাহ ও কৌতুহলের সঙ্গে পেছনে Y