পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৃহদেবতার প্রতি ভক্তিতে আপ্নত হয়ে উঠলেন সবাই-মহাসমারোহে পূজা হ’ল, সপক্ষে স্বায়া সাক্ষী ছিল, তাদের পরম যত্বে তোয়াজ ক’রে খাওয়ালেন। খাওয়ান তাতে ক্ষতি নেইকিন্তু দেবতাকে এর মধ্যে জড়ান কেন ? এরা ভাবেন কি যে দেবতা তাদেরই বাধা, হাতধৱা-ওঁদের মিথ্যাকে অবিচারকে সমর্থন করবেন। তিনি ভোগ নৈবিদ্যের লোভে ? জ্যাঠাইমা যখন ব্যস্ত হয়ে গরদের শাড়ি প’রে পূজার আয়োজনে দুটোছুটি করছিলেন তখন আমার ভারি রাগ হ’ল-আজকাল এসব মুঢ়তা আমার আদৌ সন্থ হয় না, ছেলেবেলা মত ভয়ও করি না। আর জ্যাঠাইমাকে-ভাবলুম এ নিয়ে খুব তর্ক করি, দু-কথা শুনিয়ে দেবে। তাতে ওঁদের উপকারই হবে-দেবতাকে নিয়ে ছেলেখেলা বন্ধ হবে।--কিন্তু সীতা ও মায়ের কথ ভেবে চুপ ক’রে রইলুম। | بیا ! মাস দুই হ’ল চাকুরি পেয়েছি। কলকাতায় । এ চাকুরি পাওয়ার জন্যেও আমি শৈলদির কাছে কৃতজ্ঞ । শৈলদির স্বামীর এক বন্ধুর যোগাযোগে এটা ঘটেচে। যাদের বাড়ি চাকরি করি এরা বেশ বড় লোক । বাড়ির কৰ্ত্তা নীলাম্বর রায় হাওড়া জেলার কি একটা গ্রামের জমিদার এবং সেখানকাণ তাদেরই পূৰ্বপুরুষের প্রতিষ্ঠিত এক মঠেৱ বৰ্ত্তমান মালিক-এদের মঠের অধীনে একটি ধৰ্ম্মসম্প্রদায় গ’ডে উঠেচে গত ষাট-সত্তর বছরে এবং এরাই সেই সম্প্রদায়ের ধৰ্ম্মগুরু । বৰ্দ্ধমান বঁকুড়া, বীরভুম এই তিন জেলাতে এই সম্প্রদায়ের লোক যত বেশী, অন্য জেলাতে তত নয় । ওঁদের কাগজপত্র ও দেশের নায়েবের সঙ্গে ওঁদের যে চিঠিপত্র লেখালেখি হয়েচে-তা থেকেই আমি এ-সব সংবাদ জানতে পারলাম অল্পদিনের মধ্যেই। এদের প্রধান আয় বৈশাখ মাসে মঠবাড়ির মহোৎসব থেকে-নানা অঞ্চল থেকে শিষ্যসেবকের দল জড় হয়ে সেই সময় বাৰ্ষিক প্ৰণামী, পূজা, মানত শোধ দেয়-ত ছাড়া বিবাহ ও অন্নপ্রাশনের সময়ও মঠের গদিতে প্ৰত্যেক শিষ্যের কিছু প্ৰণামী পাঠিয়ে দেওয়া নিয়ম। নীলাম্বরবাবুর তিন ছেলেই ঘোর শৌখিন ও উগ্র ধরনের শহরে বাবু। বড় ছেলে অজয়বাবু এজিনিয়ারীং পড়েছিলেন। কিন্তু পাস করেন নি-মেজ ছেলে নবীনবাবু এম-এ পাস, ছোট ছেলে অমরনাথ এখনও ছাত্র-প্রেসিডেন্সি কলেজে থাড়ৰ্ণইয়ারে পড়ে। অজয়বাবুর বয়স পঞ্চাশের কম নয়, কিন্তু পোশাক-পরিচ্ছদে কুড়ি বছরের ছোকরাও হার মানে তার শৌখিনতার কাছে-নবীনবাবুৱ বয়স চল্লিশ-বিয়াল্লিশ, লম্বা, ফস, স্বপুরুষ-পেছনের ঘাড় একদম ক্ষুর ゲん