পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 প্রমারায় নেশায় আর এই বাহারবানুর প্রবল অর্থ তৃষ্ণা মিটাইবার জন্য, নবাব সুজা খাঁ এ পর্য্যন্ত খুবই অপব্যয় করিয়া আসিয়াছেন। এখন জমা ও খরচের রেওয়া মিলাইয়া, তিনি বুঝিলেন―তাঁহার অপব্যয়ের মাত্রাটা খুবই অতিরিক্ত হইয়া গিয়াছে। যে অর্থ তিনি জীবনে উপায় করেন নাই, বাহারবানুর শোষণ নীতির ফলে, তাহার বেশী তিনি খরচ করিয়া ফেলিয়াছেন।

 কিন্তু এরূপ ভাবে-যদি আর কিছুদিন চলিত, তাহা হইলে তাঁহার সমূহ সর্ব্বনাশ ঘটিত। তাঁহার পরলোকগতা জননী, রুকিনা বিবি, বিষয় ব্যাপার সম্বন্ধে কোন খপরই রাখিতেন না। তবে এটা অবশ্য তিনি কানাষুষায় শুনিয়াছিলেন, তাঁহার পুত্র এদানীং বড়ই উচ্ছৃঙ্খলভাবে অপব্যয় করিতেছেন। এজন্য তিনি পুত্রকে বহুবার তিরস্কার করিয়াছিলেন, সাবাধান করিয়াও দিয়াছিলেন। কিন্তু এ অপব্যয়ের পরিমাণ যে কত বেশী, তাহা তিনি জানিবার চেষ্টা কখনও করেন নাই।

 সুতরাং এতদিনের পর নবাব সুজা বেগ তাঁহার জমা খরচের রেওয়া মিলাইয়া যখন বুঝিলেন, যে তাঁহার সম্পত্তির এক চতুর্থাংশ অপব্যয়ে উড়িয়া গিয়াছে, আর এই অপব্যয়ের পরিবর্তে তিনি পাইয়াছেন―কেবল, বিশ্বাসঘাতকতা, সুতীব্র শ্লেষ আগাগোড়া একটা প্রতারণাময় ভালবাসা, তখন তাঁহার মনে বড়ই একটা কঠোর অনুতাপ জন্মিল। তিনি আবার পৈতৃক ব্যবসায়ে মন দিলেন।

১০১