পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

যে সময়ের মধ্যে তাঁহার ফিরিবার কথা ছিল, সে সময়টা উত্তীর্ণ হইয়া গেল।

 রাত্রি প্রথম প্রহর উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে। বিমল জ্যোৎস্নালোকে শ্যামবর্ণা ধরণী হাস্যমুখরিতা। আনার উন্নিসার শয়ন কক্ষ পূর্ণভাবে উজ্জলিত। শয়নের সময় উত্তীর্ণ হইয়া গেলেও সে শষ্যা আশ্রয় করিতে পারিল না।

 আনারউন্নিসা, মুক্তবাতায়ন পথ দিয়া জ্যোৎস্নালোকিত প্রকৃতির দিকে অনেকক্ষণ ধরিয়া চাহিয়া থাকিয়া, একটী দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিয়া অস্ফুটস্বরে বলিল— “এত নিষ্ঠুর তুমি! আজ এত বিলম্ব করিতেছ কেন? এত দেরী ত কখনও কর না?

 এই সময়ে কে যেন পশ্চাৎ হইতে অতি সন্তর্পণে পা টিপিয়া আসিয়া, তাহার চোখ দুটী চাপিয়া ধরিল। আনার, আগন্তুকের হাত দুটী ছাড়াইয়া লইয়া দেখিল, নবাব সুজা বেগ তাহার সম্মুখে।

 সুজা বেগ সহাস্যমুখে বলিলেন—“আজ হাতে হাতে তুমি ধরা পড়িয়াছ। মেরে—জান্ পেয়ারে্! আমাকে অকারণে দোষ দিতেছ কেন? তোমায় ছাড়িয়া কি আমি নিশ্চিন্ত চিত্তে বহুক্ষণ কোথাও থাকিতে পারি।”

 আনার। তবে আজ এত দেরী করিলে কেন?

 সুজা। তুমি কি কর দেখিবার জন্য, পাশের কক্ষে একটু আত্মগোপন করিয়াছিলাম! ঠিক সন্ধ্যার পরই আজ আমি বাটীতে ফিরিয়াছি।

১০৩