পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

লাগিতে পারে। আর এ টুকুও আমি তোমায় বলিতে পারি, যে সে আঘাতের শক্তিটা সরাসর মুখ বুজিয়া সহিয়া যাওয়া তোমার পক্ষে খুবই কষ্টকর হইবে।”

 এ যে অদ্ভূত রকমের ভয় প্রদর্শন! বাহারবানু যেভাবে কথা কহিতেছিল—সেটা যে সম্পূর্ণ উপেক্ষার ভাব! সেই গৃহের সর্ব্বক্ষমতাময়ী গৃহস্বামিনা সে। একাধিশ্বরী সে! সামান্য এক কলঙ্কিতা রমণী যে এতটা স্বাধীনতা লইয়া তাহার সঙ্গে কথা কহে—এত স্পর্দ্ধা তার?

 আনারউন্নিসার আত্মমর্য্যাদা জ্ঞানের প্রচ্ছন্ন শক্তি তাহার হৃদয়ে সাহস সঞ্চার করিল। সে বিরক্তির সহিত বলিল—“আমি তোমার কোন কথাই শুনিতে চাই না। তোমার মত স্ত্রীলোকের সঙ্গে, কোন কথাই আমার থাকিতে পারে না। তোমার প্রকৃত পরিচয় তুমি সে দিন না দিলেও, তার পরক্ষণেই আমি তোমার পরিচয় পাইয়াছি। এখন আমাদের যতটুকু কথাবার্তা হইল, তাহাই যথেষ্ট। তুমি অতি অশিষ্ট ভাবে আমার সঙ্গে ব্যবহার করিয়াছ। কিন্তু তাহাও আমি উপেক্ষার চক্ষে দেখিতে প্রস্তুত। তুমি এখনি এখান হইতে চলিয়া যাও। আমার এ কক্ষ তোমার অপবিত্র নিশ্বাসে কলুসিত করিও না।”

 বাহারবানু, বিদ্রুপপূর্ণ স্বরে বলিল— “চলিয়া যাইব? কেন? নবাব সুজাবেগের উপর কি আমার কোন অধিকারই নাই? দুই তিন মাসের জন্য আমি আমার ন্যায্য অধিকার ছাড়িয়া একটু দূরে ছিলাম, তাহাতেই তুমি এতটা আধিপত্য

১১০